জর্ডানে পাচার হওয়া বাংলাদেশি নারী উদ্ধার : নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন মহেশপুরের নাজমা খাতুন

মহেশপুর প্রতিনিধি: দালালের খপ্পড়ে জর্ডানে পাচার হওয়া মহেশপুরের নাজমা খাতুন দেশে ফিরেছেন। আইন ও সালিস কেন্দ্র এবং ঝিনাইদহ এইচআরডিএফের উদ্যোগ ও সহায়তায় গত শুক্রবার তিনি দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে চিকিৎসা নেয়ার পর গতকাল রোববার মহেশপুর প্রেসক্লাবে গিয়ে জর্ডানে তার ওপর চালানো নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা করেন তিনি। এসময় তার ওপর নির্যাতনের বিচার এবং অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন নাজমা খাতুন।
রোববার দুপুরে নাজমা খাতুন মহেশপুর প্রেসক্লাবে এসে জর্ডানে তার করুণ কাহিনী বর্ণনা করেন। নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাজমা জানিয়েছেন, ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর ঢাকার একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিমানযোগে তিনি জর্ডান যান। পৌঁছুনোর পর বুঝতে পারেন তিনি পাচারের শিকার হয়েছেন। সেখানে দালালদের একটি সিন্ডিক্রেট তাকে একটি বাসায় আটকে রেখে যৌন হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতন চালানো শুরু করে। নির্যাতন সইতে না পেরে এক পর্যায় তিনি ঝিনাইদহ এইচআরডিএফ-এর সমন্বয়কারী মানবাধিকার কর্মী আব্দুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। পরে এইচআরডিএফ এবং ঢাকা আইন ও সালিস কেন্দ্রের সহযোগিতা ও সরকারের সার্বিক চেষ্টায় নাজমা খাতুনকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মোটা বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে জর্ডান পাঠানোর কথা বলা হয়। ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী থানাধীন কৈঝুরি ইউনিয়নের বাহারমোড় গ্রামের আলতাফ শেখের ছেলে আদম ব্যবসায়ী আলম ও ঢাকা পল্টনে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জাহিদুল ইসলাম ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর নাজমা খাতুনকে জর্ডানে মাহামুদ নামের এক ব্যক্তির কাছে পাচার করে দেয়। মাহামুদ তাকে ঘরে আটকে রেখে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাসায় পাঠাতো। যেতে না চাইলে তার ওপর চালানো হতো নির্মম নির্যাতন। মাহামুদের তিনতলা বিশিষ্ট ওই ফ্লাটে বিভিন্ন দেশের আরও ৭০-৮০ জন নারী ছিলো বলেও জানান নাজমা খাতুন।

Comments (0)
Add Comment