নতুন টেলিকম নীতিমালার মাধ্যমে এ খাতের পুরো ব্যবসা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের হুমকিতে ফেলে কার স্বার্থে এটা করা হচ্ছে? নতুন নীতিমালা ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হুমকির মুখে ফেলেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল হিসেবে ক্ষমতার চেয়ারে বসা অন্তর্বর্তী সরকারের করা নতুন নীতিমালায় বৈষম্যমূলক অনেক ধারা রয়েছে। এতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য না দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এসব বৈষম্য দূর করতে হবে।
রোববার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে ‘টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘নতুন টেলিকম পলিসি: দেশি উদ্যোক্তাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
টিআরএনবির সভাপতি সমীর কুমার দের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন ও সংগঠনটির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী।
সভায় তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। আইএসপিবির সভাপতি আমিনুল হাকিম, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া, আইজিবির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জুনায়েদ, আইওএফ সভাপতি আসিফ রাব্বানী, আইওএফ পরিচালন কর্মকর্তা মুশফিক মঞ্জুর, এআইওবি প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আহমেদ উর রহমান রোমেল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইওএফ সভাপতি আসিফ রাব্বানী বলেন, গোষ্ঠী স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এই পলিসি করা হয়েছে। এখানে দেশীয় উদ্যোক্তাদের কোনো স্থান নেই। বিদেশিদের হাতে এ খাতের ব্যবসা তুলে দিয়ে আগের মতোই ভিওআইপির মাধ্যমে গডফাদারদের রক্ষার মতো চেষ্টা চলছে।
এআইওবি প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যুতে বিভ্রাট হলেও দেশে টেলিকমে বড় ধরনের বিভ্রাট ঘটেনি। ৪ পয়সা আয়ের ২ পয়সাই আমরা সরকারকে দেই। আমরা মিডয়েটর নই। ফ্যাসিলেটরের বদলে বিটিআরসি-ই এখানে মিডয়েটর।
অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এআইওবি) নির্বাহী সদস্য আহমেদ উর রহমান রোমেল বলেন, নীতিমালায় ছোট অপারেটদের আমলে নেওয়া হয়নি। আইসিএক্স না থাকলে প্রতিটি এএনএস’র আলাদা রুম লাগবে। ৯৯০টির বেশি দ্বিপাক্ষিক লিংকের প্রয়োজন হবে। আমরা অতিরিক্ত মুনাফাখোর নই। যে ৪ পয়সার কথা বলা হচ্ছে- তা এমনি ওদের হাতে চলে যাবে।
আইআইজিএবির পক্ষ থেকে মেজর (অব.) মাহমুদ শাহেদ বলেন, আইআইজি মধ্যস্বত্বভোগী নয়। আইটিসি আইসিএসপি হওয়ায় তারা হয়ে ওঠবে মধ্যস্বত্বভোগী। তাই এই লাইসেন্সিকে আইসিসপিতে রূপান্তরের সুযোগ রাখা দরকার।
টিআরএনবির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে নতুন টেলিকম পলিসি তৈরি হয়নি। এতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের ঝুঁকির সম্ভাবনা আছে। টেলিকম সেবা ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি দেশীয় টেলিকম খাতে চাকরির বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।