প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ চার নির্বাচন কমিশনার শপথ

সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা কামনা
স্টাফ রিপোর্টার: সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং ৪ জন নির্বাচন কমিশনার শপথ নিয়েছেন। গতকাল বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সিইসি ও ৪ জন নির্বাচন কমিশনারকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
প্রথমে শপথ নেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপর কমিশনার হিসেবে পর্যায়ক্রমে শপথ নেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর। অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
এদিকে শপথগ্রহণ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি আশাবাদী সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবো। সব কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ (সোমবার) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা ও দোয়া চেয়ে নতুন সিইসি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্বপূর্ণ নির্বাচন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। প্রতিটি নির্বাচনই একটি চ্যালেঞ্জ। শুধু ইসি চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, সবার সহযোগিতা লাগবে। সর্বোচ্চ ভালোটা দেয়ার চেষ্টা থাকবে আমাদের। সব রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্বপূর্ণ নির্বাচন করাই চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন প্রধান নিবাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকারও করেন তিনি।
করণীয় ঠিক করতে আজ সোমবার প্রথম বৈঠকে বসবে নবগঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময় শপথ নেয়া নতুন ৪ নির্বাচন কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন। সিইসি বলেন, আমি আশাবাদী সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবো। সব কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা হবে। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা ও দোয়া চান তিনি। প্রতিটি নির্বাচনই একটি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্বপূর্ণ নির্বাচন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। শুধু ইসি চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। সবার সহযোগিতা লাগবে। সর্বোচ্চ ভালোটা দেয়ার চেষ্টা থাকবে আমাদের।
আজ সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যাবে নতুন কমিশন। সেখানে সিইসি ও ইসিদের বরণ করে নিতে প্রস্তুতি নিয়ে আছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান. কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইসি ও ৪ ইসি আজ ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কনফারেন্স রুমে বসবেন। এ সময় তারা পরিচিত হবেন সবার সঙ্গে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা মিট দ্য প্রেসে মিলিত হবেন। বিকালে ধানম-ি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তারা।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে গঠিত সার্চ কমিটির অপর পাঁচ সদস্য ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এই কমিটি দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠক করেন। সেসব বৈঠকে অংশ নেয়া অধিকাংশের দাবির প্রেক্ষাপটে ইসি গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে প্রস্তাবিত ৩ শতাধিক নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, সাবেক বিচারপতি, বিচারক, আইনজীবী, সাবেক আমলা, সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তির নাম সেই তালিকায় উঠে আসে। তবে দুইবার সুযোগ দেয়ার পরেও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করেনি। এমন প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে মোট ১০টি নাম প্রেসিডেন্টের কাছে সুপারিশ করে সার্চ কমিটি। সেই নামের তালিকা থেকে শনিবার প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য ৪ জন কমিশনারকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেন। ওইদিনই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

Comments (0)
Add Comment