আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চায় আবরারের পরিবার
স্টাফ রিপোর্টার: বুয়েটের ছাত্র চাঞ্চল্যকর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় আজ রোববার ঘোষণা করা হবে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন। এ মামলায় যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ ২৫ আসামির সবারই সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ- চেয়েছেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষ নির্দোষ দাবি করে আসামিদের খালাস চেয়েছেন। ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক শেষ করেছে। তার পর ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য এ দিন নির্ধারণ করেছেন। ২৫ আসামির মধ্যে ২২ জন কারাগারে আছেন। অন্য তিনজন পলাতক রয়েছেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। আলোচিত এ হত্যা মামলার সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা চায় আবরারের পরিবার। এ মামলার বাদী আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আশায় আছি আমরা। একই প্রত্যাশা ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞারও। তিনি বলেন, মামলায় ৪৬ জন সাক্ষী ভালোভাবে সাক্ষ্য দিয়ে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আশা করি ২৫ আসামির সবাইকে মৃত্যুদ- দেয়া হবে। আবরারের মা বলেন, আবরারকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন আসামিরা ভেঙে দিয়েছে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন পিপি আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আছেন মাহাবুব আহমেদ, আমিনুল গণী, গাজী জিল্লুর রহমান, আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ছয়জন জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারের বাইরে থাকা ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন তিনজন।
এজাহারে থাকা আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম। এজাহারবহির্ভূত ছয় আসামি হলেন- ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও মোস্তবা রাফিদ। পলাতক তিনজন হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ।