বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিতে অটোমেশন পদ্ধতি

স্টাফ রিপোর্টার: বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজতর ও দফায় দফায় হয়রানি বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া আরও ঝামেলামুক্ত এবং ঘাটে ঘাটে অবৈধ লেনদেন থেকে শিক্ষকদের মুক্ত করতেও অনুরূপ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই দুই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং হয়রানি বন্ধ করতে অটোমেশন পদ্ধতির চিন্তা-ভাবনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা গেলে শিক্ষক হয়রানির পাশাপাশি সময়ও বাঁচবে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিবন্ধিত মান-যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে, তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিতে গিয়ে পদে পদে হয়রানি ও অবৈধ-অনৈতিক লেনদেনে বাধ্য হচ্ছেন। আগে শিক্ষকদের নিয়োগ করতেন স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি বা এসএমসি এবং কলেজের গভর্নিংবডি বা পরিচালনা পর্ষদ। আইন করে মান ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিবন্ধিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা এখন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন স্কুল-কলেজে। কিন্তু এনটিআরসিএ’র সুপারিশপ্রাপ্ত এ সব শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিয়োগ নিশ্চিত করতে নানা হয়রানির মুখে পড়ছেন। প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বা কমিটির সদস্যরা সুপারিশপ্রাপ্তদের হয়রানি করছেন।

অনৈতিক লেনদেনে বাধ্য করা হচ্ছে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের। এরূপ নানা অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে এবং এনটিআরসিএতে স্তূপ আকারে জমা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

একইভাবে, শিক্ষক হয়রানি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এমপিও শাখার কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর লাগামহীন দৌরাত্ম্য বন্ধে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম। দেশের ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে বিন্দ্রেীকরণ করা হয় এমপিওভুক্তির কার্যক্রম। বলা হয়েছিল, এতে শিক্ষক হয়রানি ও অবৈধ লেনদেন বন্ধ হবে। কিন্তু ঘটেছে তার উল্টো। অর্থাৎ এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষকদের ঢাকায় মাউশিতে আসতে হচ্ছে সত্য, কিন্তু হয়রানি এবং অবৈধ লেনদেন বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে। মাউশি’তে এমপিওভুক্তির কাজে আগে ২০/২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৪০/৫০ হাজার টাকা খরচ হতো। এখন টেবিল থেকে টেবিলে দৌড়াতে হচ্ছে শিক্ষকদের। প্রতিটি টেবিলে টাকা না দিলে এমপিও ফাইল নড়ে না বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন।

সম্প্রতি শিক্ষকদের উক্ত হয়রানির ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে সুপারিশ পাওয়া সব শিক্ষক অটোমেশন পদ্ধতিতে নিয়োগ এবং এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াকে এর আওতায় আনা হবে। একবারেই কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই যেন সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কোথাও কাউকে দুর্নীতির শিকার হতে হবে না।

Comments (0)
Add Comment