বেড়েছে বাসায় চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর হার

দেশে ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ২ হাজার ৪২৩ জন : মৃত্যু ৩৫

স্টাফ রিপোর্টার: বাসায় চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর হার বেড়েছে। তিন দিনে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বাসায় মারা গেছেন ২৬ জন। বাকিরা হাসপাতালে এবং পথে মারা যান। দেশে ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ করোনা রোগী বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৫ জন। এদের মধ্যে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ১২ জন। এছাড়া বুধবার মৃত ৩৭ জনের মধ্যে বাসায় মারা যান ৫ জন। মঙ্গলবার যে ৩৭ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে বাসায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮১। এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত মহা-পরিচালক নাসিমা সুলতানা বৃহস্পতিবার সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪২৩ জন। সব মিলে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৫৭১ জন। এ নিয়ে সর্বমোট ১২ হাজার ১৬১ জন সুস্থ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৮১ জনে।

জানা গেছে, করোনায় শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে কোনো সিট ফাঁকা নেই। গুরুতর অসুস্থ হলেও সিট না পেয়ে অনেকেই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ এমনিতেই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। অবস্থার অবনতি হলেই কেবল তারা হাসপাতালে ভর্তি হন। নাসিমা সুলতানা ব্রিফিংয়ে জানান, দেশে ৫০টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৮৮টি। আর পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪ জনের। দেশে এখন পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৮৭টি নমুনা। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তিনি বলেন, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী। এদের মধ্যে ২২ জন হাসপাতালে, ১২ জন বাড়িতে মারা গেছেন। একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। তাদের ২১ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন সিলেট, ১ জন খুলনা, ১ জন রাজশাহী এবং ১ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এই ৩৫ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিলো ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১১ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১৪ জনের বয়স ছিলো ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিলো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৮৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ছয় হাজার ৭৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ জনসহ এখন পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৬৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে দুই হাজার ৩৭৫ জনকে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৯৫ হাজার ১৮৮ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৩৪ জন। মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৩৭ হাজার ৬১৯ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ৫৬৯ জন।

Comments (0)
Add Comment