মার্চে ইউপি নির্বাচন : দলীয় প্রতীকে এবারও ধাপে ধাপে ভোট

চেয়ারম্যান বা মেম্বার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক নয়
স্টাফ রিপোর্টার: আগামী বছরের মার্চ থেকে ধাপে ধাপে শুরু হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন। গতবারের মতো এবারও কয়েক ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ইউপির ভোট। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪ হাজার ১০০ ইউপির নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে তফসিল ঘোষণা করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর আগে আগামী অক্টোবরে প্রায় দুই শতাধিক ইউপিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইসিসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গতবারের মতো আসন্ন ইউপির ভোটও হবে দলীয় প্রতীকে। চেয়ারম্যান বা মেম্বার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক নয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় চাউর হয়েছে যে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ক্ষেত্রে এইচএসসি এবং মেম্বার প্রার্থীর ক্ষেত্রে এসএসসি পাস হতে হবে। এটিকে সেফ গুজব বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, এটি নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ বা প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়নি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার জন্য সংসদ সদস্যদের কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে না। সেখানে ইউপিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক করা সংবিধানবিরোধীও।
ইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় ঐ বছরের ৪ জুন। স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯-এর ২৯ (৩)-এ বলা আছে, ‘পরিষদ গঠনের জন্য কোনো সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।’ অর্থাৎ আগামী বছরের ২১ মার্চের আগেই ইউপি নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আগামী ২১ অক্টোবর থেকে ইউপি নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন শুরু হবে। করোনার কারণে স্থগিত এবং অপসারণ, পদত্যাগ, মৃত্যু ও মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে নির্বাচন উপযোগী প্রায় দুই শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আসছে অক্টোবর থেকেই শুরু হবে। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব নির্বাচন হবে। এসব ইউপিতে আগামী মাসে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ইসির একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানিয়ছেন, ২০১৬ সালে কয়েক ধাপে ইউপি নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছিলো। এবারও একইভাবে ইউপির ভোট সম্পন্ন করা হবে। ৪ হাজার ৫৭১টি ইউপির মধ্যে ৪ হাজার ১০০ ইউপিতে ভোট করা যাবে। ২০০ ইউপিতে মামলা জটিলতার কারণে নির্বাচন আটকে আছে।
এদিকে নির্বাচনের বাকি আছে ৬ মাস। এই নির্বাচন নিয়ে যেমন গ্রাম-গঞ্জে উচ্ছ্বাস রয়েছে তেমনি আছে শঙ্কা আর উৎকণ্ঠাও। কারণ সর্বশেষ ভোটে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবু সবকিছু উপেক্ষা করে এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য ও সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীরা। নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ একাধিক গরু জবাই করে বিলি করেছেন এলাকার ভোটারদের মধ্যে। নির্বাচন সামনে রেখে বাড়ি, পাড়া-মহল্লা, হাটবাজার ও রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো এখন প্রায় সরগরম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, কমিশন সভার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী অক্টোবর মাস থেকে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন শুরু করা হবে। যদি কোনো কারণে নির্বাচন করা সম্ভব না হয় তাহলে বিষয়টি দেখবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

Comments (0)
Add Comment