মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি : আপিল শুনানি পেছালো

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ার দায় আসামির আইনজীবীর
স্টাফ রিপোর্টার: জেল আপিল নিষ্পত্তির পর ফাঁসি কার্যকর হওয়া চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মোকিম ও ঝড়ুর করা নিয়মিত আপিলের বিষয়ে শুনানি ও আদেশ পিছিয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আদালতে না বসায় মঙ্গলবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইমান আলীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ নট টুডে (আজ নয়) বলে আদেশ দেয়।
এদিকে, আসামিদের করা আপিল আবেদন নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগে দীর্ঘ শুনানি হয়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান ও অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডের পক্ষে আইনজীবী সুফিয়া খাতুন শুনানি করেন।
শুনানিতে আদালত বলেন, জেল আপিলের সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ার দায় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের। তবে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আইনজীবীরা দাবি করেন, এর দায় সুপ্রিমকোর্টের সেকশনের। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী বলছেন, বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো।
‘আসামির আপিল নিষ্পত্তির চার বছর আগেই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’ এমন শিরোনামে গত ৩ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়।
পরের দিন আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। নিয়ম অনুযায়ী কোনো আসামির আপিল এবং জেল আপিল হয়ে থাকলে দুটি একসঙ্গে শুনানি হয়। তবে এ মামলায় জেল আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলেও অনিষ্পত্তি থেকে যায় আসামিদের করা আপিল। যা ফাঁসি কার্যকরের চার বছর পর আপিল বিভাগের কার্য তালিকায় শুনানির জন্য আসে। এটি নিয়েই আলোচনার সৃষ্টি হয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার কুমারি ইউনিয়নের দুর্লভপুর এলাকার সাবেক মেম্বার মনোয়ার হোসেন খুন হন। ওই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই মো. অহিমউদ্দিন বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় মোকিম ও ঝড়ুর নাম আসে। ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ মামলার বিচারে তিনজনের মৃত্যুদ-, দুইজনকে যাবজ্জীবন ও অপর আসামিদের খালাস দেয় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২। মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন একই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, মোকিম ও ঝড়ু। বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুসারে আসামিদের মৃত্যুদ- অনুমোদনের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে।
মামলার ডেথ রেফারেন্স নম্বর ছিলো ৩৯/২০০৮। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদ-াদেশ বহাল রেখে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই মামলার রায় ঘোষণা করেন। বাকি আসামিদের খালাস দেয়া হয়। পরে মোকিম (আপিল নং- ১১১/২০১৩) ও ঝড়ু (আপিল নং- ১০৭/২০১৩) মৃত্যুদ-াদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
তখন মোকিমের পক্ষে আপিল মামলাটি তদারকির দায়িত্ব পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির। দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষার পর সম্প্রতি আপিল মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় উঠে।

Comments (0)
Add Comment