স্টাফ রিপোর্টার:লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে যেখানে এক ক্রোকারিজ ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও তার কলেজপড়ুয়া মেয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টার মধ্যে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শ্রীরামপুর গ্রামে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে ঘর থেকে প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহতরা হলেন জুলেখা বেগম (৫৫) এবং তার মেয়ে তানহা আক্তার মীম (১৯)। জুলেখা ছিলেন রামগঞ্জের সোনাপুর বাজারের ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের স্ত্রী, আর মীম রামগঞ্জ মডেল কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় বাড়ির পুরুষ সদস্যরা সবাই বাজারে ছিলেন। ঘরে একা থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা বাসায় প্রবেশ করে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর তাদের লুট করা হয় প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র। পরিবারের অন্য সদস্যরা রাত ১০টার দিকে বাড়িতে এসে লাশ দুটি মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন এবং রক্তের দাগও চোখে পড়ে।
রামগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল বারী জানিয়েছেন, তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন এবং তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফরেনসিক টিমও দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ ও হত্যাকারীদের পরিচয় স্পষ্ট নয়।
সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) জামিলুল হকও জানিয়েছেন, ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য ও আসল কারণ জানা যায়নি, তদন্ত চলছে।
উল্লেখযোগ্য, এই হত্যাকাণ্ডের পূর্বেও রামগঞ্জের একই চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামে ১৩ মে রাতে ক্বারী সাহেবের বাড়িতে ঢুকে তাজিয়া বেগম (৬৫) নামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনা এলাকায় উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করছে।
এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু নিহত পরিবারের জন্য নয়, পুরো এলাকার মানুষের জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা আজকের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরি।
এই ধরনের ঘটনা সমাজে নারীর নিরাপত্তা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে। নিরাপত্তা বেষ্টনী শক্ত করার পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে সচেতন ও সজাগ থাকার আহ্বান জানানো জরুরি।