সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ‘মেধা ও মননে সুন্দর আগামী’ এ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে আলমডাঙ্গায় বাল্যবিয়ে, যৌন হয়রানি, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলমডাঙ্গা কমিউনিটি সেন্টারে কিশোর-কিশোরী ক্লাব ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলীর সভাপতিত্বে এ আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী।

বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেন, বৈষম্যহীন সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়নের প্রয়োজন। নারীর ক্ষমতায়ন মূলত অর্থনৈতিক ক্ষেত্র এবং রাজনৈতিক অবকাঠামোতে অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটি মাধ্যম, যার মাধ্যমে নারীরা নিজেদের মেধা ও যোগ্যতাকে প্রকাশ করতে পারেন এবং নিজেদের অধিকারগুলো আদায়ে সচেষ্ট হতে পারেন। নারীর ক্ষমতায়ন তখনই সম্ভব, যখন কোনও বাধা বা সীমাবদ্ধতা ছাড়াই নারীরা শিক্ষা, কর্মজীবন এবং নিজেদের জীবনধারায় পরিবর্তন আনার জন্য বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাগুলো ব্যবহারের সুযোগ পান। নারীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্জন করতে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়া মেয়েদের চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, সকল সমস্যার মূলে বাল্যবিয়ে। বাল্যবিয়ে যে কোন মূল্যে বন্ধ করতেই হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আলমডাঙ্গা থানার ওসি (অপারেশন) স্বপন কুমারী দাস বক্তব্যে বলেন, ইভটিজিং ও বালবিয়ের ঘটনা ঘটলে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে। তিনি উপস্থিত কিশোরীদেরকে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলীর মোবাইলফোন নং দিয়ে বলেন, বিদ্যালয়ে যাতায়াত কিংবা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় কেউ সমস্যা করলে ওই দুটি নাম্বারে যোগাযোগ করতে হবে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বিশেষ অতিথি সাংবাদিক রহমান মুকুল বলেন, তোমাদের সামনে সোনালী সময়ের হাতছানি। বর্তমানে আমাদের নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি। জনসংখ্যার ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী এখন শতকরা ৬৮ ভাগ। জনমিতির ভাষায় এটাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলে। কোন জাতির ভাগ্যে এ ধরনের জনমিতিক সুবর্ণকাল একবারই আসে যা স্থায়ী হয় কমবেশি ৩০-৩৫ বছর। তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে সহ¯্রাব্দের সেই সুবর্ণ সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে হবে।

সভাপতি এম সবেদ আলী বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বলেন, বাল্যবিয়ের শিকার দম্পতির সন্তানরা নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়। তাদের সন্তান শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। এভাবে যুগের পর যুগ বাল্যবিয়ে চলতে থাকলে এ জাতি একদিন শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্বাভাবিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ডামোশ কিশোরী ক্লাবের সভাপতি আসমাউল হুসনা মুনমুনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপসমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ইসরাইল হোসেন টিটু, নাহিদ ফাতেমা, নাগদাহ কিশোরী ক্লাবের সভাপতি রানু খাতুন, বকশিপুর কিশোরী ক্লাবের সভাপতি মারিয়া খাতুন প্রমুখ।

ওই আলোচনাসভায় অংশগ্রহণ করে ডামোশ কিশোরী ক্লাব, বকশিপুর কিশোরী ক্লাব, ফরিদপুর কিশোরী ক্লাব, কুলচারা কিশোর ক্লাব, পাইকপাড়া কিশোরী ক্লাব, কুটিপাইকপাড়া কিশোরী ক্লাব ও নাগদা কিশোরী ক্লাব।

 

Comments (0)
Add Comment