জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গতকাল সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এমন এক ঘোষণা দিলেন, যা দীর্ঘদিন নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন আশার আলো হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘শান্তি ও ন্যায়ের জন্য দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ। ফিলিস্তিনিদের মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
ম্যাক্রোঁর ঘোষণার পরপরই ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের ঢেউ বয়ে যায়। অন্তত ৫১টিরও বেশি টাউনে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্যারিস, মার্সেই, লিওঁ ও তুলুজের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ হাত ধরে হাত মিলিয়ে, চোখে অশ্রু, কণ্ঠে একসাথে স্লোগান দেয়—‘Stop the killing, Free Palestine!’
ফরাসী জনগণের উচ্ছ্বাস এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকরা বলছেন, এটি চোখে পড়ার মতো এবং হৃদয়স্পর্শী। কেউ কেউ কেঁদে ফেলেছেন কারণ তারা বুঝতে পারছেন, এই দীর্ঘ যন্ত্রণার দিনে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো কেবল প্রতীক নয়; এটি মানবতার জয়। স্থানীয় মেয়র ও কাউন্সিলররাও জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পতাকা উত্তোলনে অংশ নেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফ্রান্সের পদক্ষেপ কেবল প্রতীকী নয়। এটি ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে, অন্যায় ও দখলদার শক্তির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে। ফরাসী জনগণের একাত্মতা মানবিক সমর্থনের এক অনন্য প্রতীক হিসেবে বিশ্বমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
ফ্রান্সের ঐতিহাসিক ঘোষণার সঙ্গে পতাকা উত্তোলনের দৃশ্য বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে—ন্যায়বিচার দমে যায় না। দীর্ঘ সংগ্রামের পর স্বাধীনতার আলো ধীরে ধীরে দেখা দেয়। আজ পৃথিবী দেখেছে, এক দেশের সাহস এবং জনগণের উচ্ছ্বাস কিভাবে নিপীড়িত মানুষের আশা জীবন্ত রাখতে পারে। প্রত্যেক পতাকা, প্রত্যেক চোখের অশ্রু, প্রত্যেক স্লোগান ইতিহাসের পাতায় লেখা এক মানবতার জয়।
এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনের মানুষ হয়তো প্রথমবারের মতো অনুভব করছে, তাদের দুঃখ ও সংগ্রামকে কেউ ভুলে যায়নি। ফরাসী জনগণের উচ্ছ্বাস ও সাহস কেবল রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, এটি এক হৃদয়স্পর্শী বার্তা—নিপীড়িতের স্বপ্ন আজ জীবন্ত।