গাজায় দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান ৪ হাজারের বেশি বিজ্ঞানীর

বিশ্বের ৪ হাজারেরও বেশি বিজ্ঞানী, যাদের মধ্যে আছেন ১৪ জন নোবেল বিজয়ী ও ৫ জন ফিল্ডস মেডেলজয়ী, গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়ে গভীরভাবে মর্মাহত। কৃত্রিম খাদ্য সংকট মানুষকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিচ্ছে—এটা একেবারেই অসহনীয়।’

বিবৃতিটি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ এবং জাতিসংঘে ইসরাইলের প্রতিনিধি ড্যানি দ্যাননের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা এতে আরও উল্লেখ করেছেন, ‘গাজায় চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, শিশুদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষা পর্যন্ত না থাকা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসামরিক অবকাঠামোর ধ্বংসযজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষের অধিকার ও জীবনের প্রতি উদাসীনতা আমাদের হতবাক করেছে। ইসরাইল সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি যেন এই মানবিক বিপর্যয়ের অবসান ঘটায়।’

কারা কারা স্বাক্ষর করেছেন

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ইতালির নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী গেরার্ড ‘টি হুফট, ডেভিড পলিটজার, গণিতবিদ রজার পেনরোজ, পদার্থবিজ্ঞানী তাকাকি কাজিতা ও জর্জিও পারিসি।

ভারতের বিজ্ঞানীদের মধ্যেও স্বাক্ষর করেছেন টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি), ইনস্টিটিউট অব ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সেস এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেস (নিমহ্যানস)-এর গবেষকরা।

এছাড়া ফিল্ডস মেডেলজয়ী গণিতবিদ আলেসিও ফিগালি (ইটিএইচ জুরিখ, সুইজারল্যান্ড) এবং ডেভিড বি মামফোর্ড (হার্ভার্ড ও ব্রাউন ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্রের এমেরিটাস অধ্যাপক) নামেও স্বাক্ষর রয়েছে। ইউরোপ থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক স্বাক্ষর এসেছে, এরপর উত্তর আমেরিকা।

হামাসকেও আহ্বান

বিবৃতিতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলা ও জিম্মিদের অমানবিক অবস্থার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘হামাসকে অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে।’

তবে একই সঙ্গে বিবৃতিতে গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর চলমান ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞকেও ‘অযৌক্তিক ও অকল্পনীয়’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, ‘দশ হাজারেরও বেশি নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, এর মধ্যে প্রায় এক হাজার শিশুর বয়স এক বছরেরও কম—এমন পরিস্থিতির কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।’

বিশ্বকে পদক্ষেপ নেওয়ার ডাক

বিবৃতির উপসংহারে বলা হয়েছে, ‘মানবতার সেবায় নিয়োজিত বিজ্ঞানী হিসেবে আমরা বিশ্বজুড়ে সব সরকার ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানাচ্ছি—এই বিপর্যয় ঠেকাতে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে।’