চীনে আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করলেন পুতিন ও কিম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার ফাঁকে বুধবার বেইজিংয়ে এই বৈঠক হয়।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বৈঠকের আগে পুতিন নিজ গাড়িতে কিমকে নিয়ে আসেন। আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ আসে এবং পুতিন কিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা ‘নব্য-নাৎসিবাদ’ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আপনার সেনারা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। আমরা কখনোই তাদের ত্যাগ ভুলব না।’

কিম জং উনও রুশ প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার পাশে আমরা ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে সব ধরনের সহায়তা করব।’ কিম পুতিনের সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করেন এবং জানান, শিগগিরই নতুন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, বৈঠকের পর কিমকে রাশিয়া সফরে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পুতিন।

উল্লেখ্য, চীনের এই সামরিক কুচকাওয়াজে দুই ডজনেরও বেশি দেশের নেতা অংশ নেন। এটি ছিল কিম জং উনের প্রথম আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক সমাবেশে যোগদান। সাধারণত তিনি খুব কম বিদেশ সফরে যান এবং গেলে একান্ত বৈঠকের মাধ্যমেই অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার জন্য উত্তর কোরিয়া প্রায় ১৫ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এ ছাড়া মিসাইল ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্রও সরবরাহ করেছে। বিনিময়ে পিয়ংইয়ং খাদ্য, অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসব সেনা প্রথমদিকে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নেন, এরপর পশ্চিম কুর্স্ক অঞ্চলে লড়াইয়ে অংশ নেন—যেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনী আগস্টে হঠাৎ হামলায় কিছু এলাকা দখল করে রেখেছে। তবে এই যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেবল তিন মাসে অন্তত এক হাজার সেনা নিহত হয়েছে। পরবর্তীতে সিউলের সংসদ সদস্যরা বলেন, প্রায় ৪ হাজার ৭০০ জন হতাহত হয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।