চুয়াডাঙ্গার তালতলায় স্কুলছাত্র নিখোঁজ : জিনে তুলে নিয়ে গেছে বলে চলছে অপপ্রচার

সচেতন মহলের ধারণা অপহরণ

 শিশু আবু হুরায়রাকে উদ্ধারের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আবু হুরায়রা নামে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজ আবু হুরায়রা (১১) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে। নিখোঁজের দু’দিনেও ওই শিশুর সন্ধান মেলেনি। সচেতন মহলের ধারণা শিশু আবু হুরাইয়াকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে গ্রামের কেউ কেউ বলছেন, তাকে জিনরা তুলে নিয়ে গেছে। পুলিশ জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শিশু আবু হুরায়রাকে সুস্থভাবে উদ্ধারের। বছরখানেক আগে একইভাবে গ্রামের হায়াত আলী নামের এক বৃদ্ধ কৃষক নিখোঁজ হয়েছিলেন। মুক্তিপণ দিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছিলো। তবে পরিবারের দাবি জিনরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো হায়াত আলীকে। নিখোঁজের পাঁচদিন পর নাকি জিনরা পুনরায় রেখে গিয়েছিলো। এসব নিয়ে শিশু আবু হুরায়রার পিতা কথিত এক কবিরাজের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। শিগগিরই আবু হুরায়রাকে পাওয়া যাবে বলে ওই কবিরাজ আশ্বস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে তালতলা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ধনাঢ্য ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আবদুল বারেকের ছয় মেয়ের পর জন্ম হয় ছেলে আবু হুরায়রার। আবু হুরায়রা এ বছর লটারির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সে বাড়ির পার্শ্ববর্তী রনজু হক নামের এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে বের হয়। প্রাইভেট শিক্ষকের ঘরে বইয়ের ব্যাগটা রাখার পর সে বাইরে বেরিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়। রাতে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। মাইকিং করা হয়। কিন্তু গত দু’দিনেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি শিশু আবু হুরায়রার।
গ্রামের সব মানুষের মুখে মুখে একই কথা আবু হুরায়রাকে জিনরা তুলে নিয়ে গেছে। তাকে জিনের মাধ্যমে ফেরত দেয়ার জন্য নাকি সিরাজগঞ্জ জেলার কথিত এক কবিরাজ ৫০ হাজার টাকার দাবি করেছেন। তাকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়াও হয়েছে। ছেলে ফেরত পাওয়ার পর আরও ২০ হাজার দেয়া লাগবে। তবে টাকা দেয়ার কথা অস্বীকার করলেও সিরাজগঞ্জের ওই কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কথা স্বীকার করেছেন শিশু আবু হুরায়রার পিতা আব্দুল বারেক। তিনি বলেছেন ছেলে ফেরত পেলে টাকা দিতে কোনো আপত্তি নেই আমার। ওই কবিরাজের মোবাইল নম্বরটা চাইলে তিনি নম্বরটা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
গ্রামবাসীরা জানায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে একইভাবে গ্রামের বিত্তশালী কৃষক হায়াত আলী (৭০) নিখোঁজ হয়েছিলেন। ঘটনার পাঁচদিন পর সন্ধ্যায় তাকে মাঠে পাওয়া যায়। তাকেও নাকি সিরাজগঞ্জের ওই কবিরাজের মাধ্যমে জিনরা রেখে গিয়েছিলো। নানামুখী গুঞ্জনে আসল ঘটনা ধামাচাপা পড়ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘আমরা সব কিছু মাথায় রেখেই শিশু আবু হুরায়রাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তার বাবার সঙ্গে গ্রামের কারো কোনো প্রকার বিরোধ আছে কিনা তাও আমরা খতিয়ে দেখছি। এছাড়া প্রাইভেট শিক্ষককেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে।’

Comments (0)
Add Comment