চুয়াডাঙ্গায় আরও ৮ জনের মৃত্যু : ৫৪ নমুনায় শনাক্ত ৪৪

২ হাজার ১১২ জন সক্রিয় রোগীর মধ্যে ১৩৯ জন হাসপাতালে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫জনসহ উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা আরও নতুন ৪৪জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা শনাক্তের হার বিবেচনায় ৮১.৪৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাড়াল ৫ হাজার ২শ ৯ জনে। এদিন ৩৪ জনসহ জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৪ জন। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় শনাক্তকৃত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিলো ২ হাজার ১১২ জন। এর মধ্যে নিজ বাড়িতে ছিলেন ১ হাজার ৯শ ৭৩ জন ও হাসপাতালে ছিলেন ১শ ৩৯ জন।
চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে আর মধ্যে সদর উপজেলার বিজলী রায় নামের এক নারী বেশ কিছুদিন যাবত জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভুলছিলেন। গত ৯ জুলায় তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। ওইদিনই বিজলী রাইকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। স্বাস্থ্য বিভাগ বিজলী রায়ের নাম ছাড়া বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেননি।
মনোয়ারা খাতুন (৬০) এক বৃদ্ধা রেডজোনে মারা গেছেন। সম্প্রতি গত ৫ জুলাই করোনা পজিটিভ হয়ে সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ভর্তি হন। গতকাল শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি সদর উপজেলার ভিমরুল্লাহ গ্রামের বিলাত মোল্লার মেয়ে।
সম্প্রতি জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভুগছিলেন ৪৫ বছরের বেলি খাতুন। তাকে সদর হাসপাতালের হলুদজোনে ভর্তি করা হয়। গত ১০ জুলাই তার সংগ্রহীত নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়। নেয়া হয় রেডজোনে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বেলী খাতুন সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামের মঙ্গল ম-লের মেয়ে।
দামুড়হুদা উপজেলা দর্শনা থানাধীন মৃত আজহার উদ্দিনের মেয়ে পরিসন খাতুন (৫০) জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। গত ১৪ জুলাই তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সদর হাসপাতালের রেডজোনে মৃত্যু হয় তার। তবে করোনায় মারা যাওয়া একজনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের হলুদ জোনে আরও তিনজন মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫৩ জনে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গাতেই মারা গেছেন ১৩৭ জন। চুয়াডাঙ্গার বাইরে মারা গেছেন ১৬ জন। শুক্রবার নতুন ৫৪ নমুনাসহ মোট ১৯ হাজার ৩৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ করেছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট ৫৪ নমুনার ফলাফল আসে। এর মধ্যে ৪৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট ফলাফল পাওয়া গেছে ১৮ হাজার ৭০৭ জনের। নতুন শনাক্ত ৫৪ জনের মধ্যে সদরের ২৯, আলমডাঙ্গায় ৮, দামুড়হুদা উপজেলার ৭ জন রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ২ হাজার ৯৪৪ জন।
এদিকে শনাক্ত হওয়ার আগেই উপসর্গ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় একের পর এক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে মারা গেলে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে না। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীরা ভিড় করছে। এ থেকেও ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়াচ্ছে বলে স্বাস্থ্য সচেতন মহলের অভিমত।

Comments (0)
Add Comment