স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে মহিরুল ইসলাম নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার ভোরে তিনি মারা যান। পরিবারের অভিযোগ, মারধরের কারণে তিনি মারা গেছেন। হাজতি মহিরুল ইসলাম ছিলেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি পশ্চিমপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে। তিনি দামুড়হুদা থানার মাদক মামলায় আসামি ছিলেন। গত শনিবার পুলিশ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মহিরুল ইসলাম রোববার দিনগত রাত ২টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আড়াইটার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরে সদর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিকে মহিরুলের পরিবারের অভিযোগ,
গ্রেফতারের পর পুলিশি হেফাজতে তাকে মারধর করা হয়। ফলে গুরুতর আহত হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। মহিরুলের বড় ভাই সুবার আলী বলেন, ‘পুলিশ যখন তাকে তুলে নিয়ে যায় তখন তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। কিন্তু এখন দেখি ভাইয়ের হাতে আঘাতের চিহ্ন। পুলিশকে এর দায় নিতে হবে। পুলিশই তাকে মেরে ফেলেছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘শনিবার বেলা ১১টার দিকে মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মহিরুলকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। আসামিকে প্রহার করার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিব সাদী বলেন, ‘কারাগার থেকে হাজতি মহিরুলকে যখন জরুরি বিভাগে নেয়া হয়, তিনি সম্পূর্ণ চেতনায় ছিলেন না। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিমুজ্জামান তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নাসিমুজ্জামান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই অবস্থায় ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোকে মারা গেছেন।’ এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার মো. ফখরুদ্দিন বলেন, শুরু থেকেই তাকে কারা অভ্যন্তরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে মহিরুলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তসহ আইনি সব ব্যবস্থার পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিকে নির্যাতনের যে অভিযোগ পরিবার করছে তার কোনো ভিত্তি নেই।’