ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা বৃদ্ধকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

মেহেরপুরে সড়কে গতিরোধক দেয়ায় দোকানীকে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের মারধর

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের আমঝুপিতে পল্লী বিদ্যুত অফিসের শ্রমিকদের পিটুনিতে নিহত হয়েছন ভ্যানচালক আবুল বাসার। সড়কে গতিরোধক দেয়ায় ছেলেকে মারধর করা শ্রমিকদের ঠেকাতে গেলে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে শ্রমিকরা। পরে আবুল বাসারকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়। এর আগে সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ মারপিটের ঘটনা ঘটে। নিহত ভ্যানচালক আবুল বাসার (৬৫) ওই এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আবুল বাসার মোল্লার ছেলে সালাউদ্দীন মোল্লার উদ্যোগে সম্প্রতি আমঝুপি-ইসলামনগর সড়কের মাঠপাড়ায় ইট-বালু দিয়ে গতিরোধক তৈরি করে গ্রামবাসী। সেখানেই একটি মুদিদোকান রয়েছে সালাউদ্দীনের। গতকাল বুধবার মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত অফিসের খুঁটি বসানো শ্রমিকরা এবং একটি কোম্পানির কোমল পানীয় বহন করা গাড়ি ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলো। দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় ওই গতিরোধকের কারণে তারা দুর্ঘটনায় পড়তে যাচ্ছিলো। এ সময় সরকারি রাস্তায় ব্যক্তি উদ্যোগে গতিরোধক দেয়াকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দীন মোল্লার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন কোম্পানিটির বিপণন কর্মকর্তা। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় একপর্যায়ে পল্লী বিদ্যুত অফিসের শ্রমিকদের গাড়ীতে থাকা রড দিয়ে সালাউদ্দীনকে পেটাতে থাকে তারা। ছেলেকে হামলা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে যান আবুল বাসার। তাকেও মারপিট করতে থাকে শ্রমিকরা। পরে তারা দু’জন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তারপরও তারা পেটাতে থাকে। এসময় বৃদ্ধ আবুল বাসারের মাথায় রডের আঘাত লাগে। পরে এলাকাবাসী ছুটে এলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। ভর্তির এক ঘণ্টার মধ্যে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাসার মোল্লা।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, অভিযুক্তরা মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত অফিসের চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক। খুঁটি বসানোর কাজ করেন। তারা সবাই শহরের দিঘীর পাড়ার বাসিন্দা। তবে অপর অভিযুক্ত বিপণন কর্মকর্তার পরিচয় জানা যায়নি। তারা সকলেই পলাতক রয়েছে।
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ দারা খান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতের শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সেখানে মারামারি করার সময় যেসব জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে, সেসব জব্দ করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মর্গে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। যারা এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত তাদের নামের তালিকা তৈরি করে দ্রুত আটকের চেষ্টা চলছে।

 

Comments (0)
Add Comment