তিনদিনেও সন্ধান মেলেনি চুয়াডাঙ্গার স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার

জিনের মাধ্যমে ফেরত পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে বাবা-মা

স্টাফ রিপোর্টার: তিনদিনেও সন্ধান মেলেনি চুয়াডাঙ্গা তালতলার স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার। গত বুধবার বিকেলের পর নিজবাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ রয়েছে সে। এদিকে, স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র এলাকায় জন্ম নিয়েছে নানান ঘটনার। প্রথমদিন বাড়ির পাশে পুকুরে তল্লাশি চালানোর পর জিনে তুলে নেয়ার গুঞ্জন ওঠে। পরিবারের লোকজনও বিষয়টি দাবি করে কথিত এক কবিরাজের সাথে যোগাযোগ করছেন। তবে শিশু আবু হুরায়রাকে উদ্ধারে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
জানা গেছে, ধনাঢ্য ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আবদুল বারেকের ছয় মেয়ের পর জন্ম হয় ছেলে আবু হুরায়রার। আবু হুরায়রা এ বছর লটারির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। গত বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আবু হুরায়রা বাড়ির পার্শ্ববর্তী রনজু হক নামের এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে বের হয়। প্রাইভেট শিক্ষকের ঘরে বইয়ের ব্যাগটা রাখার পর সে বাইরে বেরিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়। রাতে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। মাইকিং করা হয়। না পেয়ে অনেকেই ধারণা করেন বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে নিখোঁজ হয়েছে হুরায়রা। সন্ধ্যার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা সেখানে গিয়ে দীর্ঘসময় ধরে পুকুর তল্লাশি করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তিনদিনেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি শিশু আবু হুরায়রার।
গ্রামের সব মানুষের মুখে মুখে একই কথা আবু হুরায়রাকে জিনরা তুলে নিয়ে গেছে। তাকে জিনের মাধ্যমে ফেরত দেয়ার জন্য নাকি সিরাজগঞ্জ জেলার কথিত এক কবিরাজ ৫০ হাজার টাকার দাবি করেছেন। তাকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়াও হয়েছে। ছেলে ফেরত পাওয়ার পর আরও ২০ হাজার দেয়া লাগবে। তবে টাকা দেয়ার কথা অস্বীকার করলেও সিরাজগঞ্জের ওই কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কথা স্বীকার করেছেন শিশু আবু হুরায়রার পিতা আবদুল বারেক। তিনি বলেছেন ছেলে ফেরত পেলে টাকা দিতে কোনো আপত্তি নেই আমার। ওই কবিরাজের মোবাইল নম্বরটা চাইলে তিনি নম্বরটা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে, গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে একইভাবে গ্রামের বিত্তশালী কৃষক হায়াত আলী (৭০) নিখোঁজ হয়েছিলেন। ঘটনার পাঁচদিন পর সন্ধ্যায় তাকে মাঠে পাওয়া যায়। তাকেও নাকি সিরাজগঞ্জের ওই কবিরাজের মাধ্যমে জিনরা রেখে গিয়েছিলো। নানামুখী গুঞ্জনে আসল ঘটনা ধামাচাপা পড়ছে কি না?
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘আমরা সব কিছু মাথায় রেখেই শিশু আবু হুরায়রাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যে শিক্ষকের কাছে ব্যাগ রেখে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছে ওই শিক্ষকও সন্দেহের বাইরে নন। এছাড়া তার বাবার সঙ্গে গ্রামের কারো কোনো প্রকার বিরোধ আছে কিনা তাও আমরা খতিয়ে দেখছি।

Comments (0)
Add Comment