পরকীয়ার জেরে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে খুন

চুয়াডাঙ্গায় পরকীয়ার জের ধরে জেসমিন খাতুন ওরফে আয়না খাতুন (৩৮) নামে এক কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দিনগত রাত ২ টার দিকে সদর উপজেলার নতুন যাদবপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।  নিহত আয়না খাতুন একই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী হাবিবুর রহমান হাবিলের স্ত্রী। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, গত ২০ বছর আগে ঝিনাইদহ হরিনাকুন্ডু উপজেলার কেসমত গোড়াগাছা আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে আয়না খাতুনের সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার  মৃত হাতেম মন্ডলের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়েও হয়। তাদের মেয়ে তাসমিন খাতুনের বিয়ে হয়েগেছে। ছেলে আজমির হোসেনের বয়স আট বছর। সে বাড়ির পাশের ফুফার বাড়িতে থাকে। গত ১৮ বছর আগে জীবিকার তাগিদে কুয়েতে যান হাবিল। সেই থেকে একই গ্রামের ওসমান মন্ডলের ছেলে মামুন মন্ডল আয়না খাতুনকে বিরক্ত করতো। মঙ্গলবার দিনগত রাত ২ টার দিকে খুন হন আয়না খাতুন। সেসময় বাড়ির প্রধান ফটক ও ঘরের মূল ফটক বন্ধ ছিল। তার চিৎকারে বাড়ির আশপাশের  সবাই ছুটে আসেন। কিন্তু তার আগেই মারা যান আয়না খাতুন। পরে খবর দেয়া হয় পুলিশে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের পাশ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ দেখে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। ওই ঘটনায় রাতেই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- একই গ্রামের

মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে হাসান আলী (২৮), মৃত বাহার লস্করের ছেলে আব্দুর রহমান (৫২) ও ওসমান মন্ডলের ছেলে মামুন মন্ডল (২৭)। নিহতের বড় ভাই আব্দুর রব জানান, মামুন ফোনে বিরক্ত করতো। বেশ কয়েকদিন আগে ফোন দিয়ে হুমকিও দেয় মামুন। গত ৫-৭ বছর আগে মামুন তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে যায়। সেই থেকে মামুন তার পিছু ছাড়েনি। ১০ দিন পর কুয়েত থেকে হাবিলের বাড়ি আসার কথা ছিল। মৃত্যুর খবর শুনে আগামীকাল বাড়ি আসবেন হাবিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বিল্লাল হোসেন জানান, রাতে নিহত আয়না খাতুনের দেবর হাসান এসে হত্যার বিষয়টি আমাদের জানায়।  নিহত আয়না খাতুন বিবস্ত্র অবস্থায় খাটের উপর পড়ে ছিল। ছুরিটা তার গলার উপরেই ছিল।

সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক নিখিল অধিকারী জানান, কারও একার পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকজন মিলে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।  সকাল ৯টার দিকে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণ হয়েছে কি না?  তা ময়না তদন্তের পরই জানা যাবে।

Comments (0)
Add Comment