পৌর নির্বাচন পোস্টারে পোস্টারে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে দর্শনাকে

৩ মেয়র প্রার্থীসহ ৫০ জনের প্রচারণায় ভোটের মাঠ সরগরম
দর্শনা অফিস: দর্শনা পৌর নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৭ দিন। নির্বাচনের দিন যতোই এগিয়ে আসতে প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা ততোই বাড়ছে। নির্বাচনী আচরণ স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন রয়েছে মাঠে। ৩ মেয়র, ৮ সংরক্ষিত মহিলা ও ৩৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় এখন সরগরম দর্শনার হাট-বাজার ও অলি-গলি। দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকে প্রচারে কান ঝালাপালা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের। দর্শনা পৌরসভার ৬ষ্ঠ এ নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন আ.লীগ মনোনীত পরপর তিনবারের নির্বাচিত মেয়র মতিয়ার রহমান। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন বিএনপি মনোনীত সাবেক ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান বুলেট। এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন জামায়াত নেতা আশকার আলী। এ নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠ পর্যায়ে মতিয়ার রহমান ছাড়া কারো দেখা মিলছে না। ফলে প্রচার-প্রচারণায় শীর্ষে রয়েছেন মতিয়ার রহমান। শুধু প্রার্থীই নয় ধানের শীষ ও মোবাইল প্রতীকের পক্ষে কোনো কর্মীকেও মাঠে দেখা যাচ্ছে না। এদিকে প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে মুড়ে দেয়া হয়েছে গোটা দর্শনা শহর। হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকানসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো নির্বাচনমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচনী হাওয়া বইছে সর্বত্র। গত ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নড়েচড়ে বসে প্রার্থীরা। মাস দুয়েক আগে থেকেই সাম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে নীরব প্রচারণা দেখা গেলেও তা প্রকাশ্যে রূপ নেয় তফসিল ঘোষণার পর। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ৩১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ দিন ছিলো। শুরু থেকে দর্শনা পৌর মেয়র প্রার্থী হিসেবে ডজন খানেক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও শেষ অবধি ৩ জন প্রার্থীতে এসে দাঁড়িয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ১৬ ভোট কেন্দ্রে ৮২টি বুথে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। ৩ জুলাই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসে। যাচাই-বাছাই পর্বে মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে কারো মনোনয়ন বাতিল না হলেও সাধারণ কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাতিলকৃত প্রার্থী ৪নং ওয়ার্ডের মামুন হোসেন। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ইসাহাক আলী সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী দর্শনা পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৫৭১ ও মহিলা ১৩ হাজার ৯৪৬ জন। এ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে আম্বিয়া খাতুন ফুট্ররি (আনারস) ও বিলকিস খাতুন (চশমা)। ৪, ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডে জাহানারা খাতুন (চশমা) ও শিউলী আক্তার (আনারস)। ৬, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সুরাতন নেছা (আনারস), সেলিনা পারভিন (চশমা), ফাহিমা খাতুন (টেলিফোন), ও শাহিমা বেগম (জবাফুল) প্রতীকে ভোট যুদ্ধে মাঠ চষছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৫৫ ভোটার, প্রার্থী হাসান খালেকুজ্জামান (পানির বোতল), আনোয়ার হোসেন দুলু (গাজর), নাসির উদ্দিন খেদু (উটপাখি) ও আজিজুর রহমান সুজন (ব্রিজ), ২নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৩৬৯ জন, প্রার্থী এনামুল কবির (পাঞ্জাবী), আব্দুল কুদ্দুস (টেবিল ল্যাম্প) ও সোহেল রানা মহিউদ্দিন (উটপাখি), ৩নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১২১ জন, প্রার্থী রবিউল হক সুমন (উটপাখি), আনোয়ারুল ইসলাম দোলন (টেবিল ল্যাম্প) ও শহিদুল ইসলাম (ব্লাকবোর্ড), ৪নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১১০ জন, প্রার্থী মনির সরদার (ব্রিজ), আব্দুল রাজ্জাক (উটপাখি), হাবিবুল্লাহ বাহার (ব্লাকবোর্ড), রফিকুল ইসলাম (পাঞ্জাবী) ও সোহেল মিয়া (টেবিল ল্যাম্প), ৫নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১০৯ জন, প্রার্থী নজরুল ইসলাম (পাঞ্জাবী) লুতফর রহমান (পানির বোতল), লাল্টু খান (ব্রিজ), আব্দুল মিয়া (টেবিল ল্যাম্প), রাজিবুল ইসলাম (উটপাখি) ও সাইফুল ইসলাম (ডালিম), ৬নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২৩ জন, প্রার্থী রেজাউল ইসলাম (পানির বোতল), হারুন অর রশিদ (উটপাখি) ও কামরুল হুদা (টেবিল ল্যাম্প), ৭নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৬৫ জন, প্রার্থী কানচু মাতবর (উটপাখি), আয়নাল হক (পানির বোতল), মোস্তাফিজুর রহমান (ডালিম) ও সাবির হোসেন মিকা (পাঞ্জাবী), ৮নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪৪৪ জন, প্রার্থী চান্দু মাস্টার (পানির বোতল), বাবুল আক্তার (ডালিম), শরিফ উদ্দিন টেবিল ল্যাম্প), বিল্লাল হোসেন (উটপাখি) ও নাসির উদ্দিন (পাঞ্জাবী)। ৯নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৯২৮ জন, প্রার্থী মঈনুদ্দিন মন্টু (গাজর), বাবলুর রহমান (পাঞ্জাবী), আশুর উদ্দিন (উটপাখি), আজিজুল হক (ডালিম), সাইদুর রহমান (পানির বোতল) ও জাহাঙ্গীর আলম (টেবিল ল্যাম্প) প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে মাঠে রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মতিয়ার রহমান রহমানের নৌকা প্রতীকের পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবুসহ আ.লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ভোটার-সমর্থকরা ব্যাপক-উৎসাহ-উদ্দিপনার সাথেই মাঠে রয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাবিবুর রহমান ব্যালটের ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে দলের কোনো নেতৃবৃন্দকে এ পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আশকার আলীর মোবাইল ফোন প্রতীকের পক্ষে জামায়াত-শিবিরের নেতৃবৃন্দকে প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না।

 

Comments (0)
Add Comment