প্রেমের টানে কুড়িগ্রামে গিয়ে লাশ হলো চুয়াডাঙ্গার রাজু

স্টাফ রিপোর্টার: ‘অনলাইনে পরিচয়, অতঃপর প্রায় ১ বছরের প্রেম। এরপর মেয়ের পরিবার মেয়েটির অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করলে ছেলেটি গত ১২ ফেব্রুয়ারি ছুটে আসে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে। তারপর চেষ্টা করে মেয়ে ও তার পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করাতে। অবশেষে রাজি করাতে না পেরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে সে’। সকালে কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা নদীতে উদ্ধার হওয়া যুবকের লাশ শনাক্ত করতে এসে এভাবেই বর্ণনা করেছিলেন তার বন্ধু মোফাজ্জল। গতকাল শনিবার সকালে কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা নদীতে উদ্ধার হওয়া যুবকের লাশ শনাক্ত করতে এসে এসব জানান তার বন্ধু মোফাজ্জল। প্রেমের টানে লাশ হওয়া সেই যুবকের নাম রাজু আহমেদ (২৫)।
আরও জানা যায়, প্রেমিকার সাথে দেখা করতে ঢাকার কর্মস্থল থেকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রেয়সীর এলাকায় ভ্রমণ। এভাবে চলার পর একদিন জানা গেলো প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয় প্রেমিকার। খবর পেয়ে সেদিনই কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে আসেন প্রেমিক রাজু আহমেদ (২৫)। কিন্তু বিয়ে ঠেকাতে পারেননি, পারেননি প্রেমিকাকে ফেরাতেও। ব্যর্থ হয়ে শুক্রবার রাতে আবারও ঢাকার উদ্দেশে ফেরার কথা ছিলো তার। কিন্তু ফেরা হয়নি। শনিবার সকালে ধরলা ব্রিজের নিচ থেকে রাজু আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার নিহত রাজুর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রেমের টানে রাজুর কুড়িগ্রাম আসার এসব তথ্য জানিয়েছেন রাজুর পূর্ব পরিচিত নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হোসেন। এর আগেও রাজু কুড়িগ্রাম এসে ফিরে গেছেন। একবার তার পরিবারের লোকজন তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় বলে জানান মোফাজ্জল। নিহত রাজুর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুরে। তার বাবার নাম আশরাফুল ইসলাম। দুই ভাইয়ের মধ্যে রাজু বড়। সে পড়াশোনা শেষে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করতো বলে জানান রাজুর বাবা। রাজুর বাবা জানান, প্রেম ঘটিত কারণে রাজু এর আগেও কুড়িগ্রাম গিয়েছিলো। একবার আমরা তাকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু এবার কবে গেছে তা আমরা জানতাম না, আমাদেরকে কিছু বলেওনি। কুড়িগ্রাম থেকে রাজুর এক বন্ধুর ফোন পেয়ে ছেলের মৃত্যুর খবর জেনেছেন। ছেলের মরদেহ নেয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা থেকে কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হচ্ছেন বলেও জানান রাজুর বাবা। রাজুর বন্ধু মোফাজ্জল জানান, যে তরুণীর সাথে রাজুর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো তার বাড়ি নাগেশ্বরীতে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি তার বিয়ে হয়। এজন্য রাজু মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত ছিলো। গত রাতে তার ঢাকায় ফেরার কথা ছিলো। কীভাবে তার মৃত্যু হলো তা আমরা বুঝতে পারছি না। ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। নিহতের পরিচয়সহ তার মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে আমাদের অফিসাররা তদন্ত করছে। নিহত রাজুর পূর্ব পরিচিত কুড়িগ্রামের নাগে¦শ্বরী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হোসেন জানান, নিহত রাজু আহমেদ প্রেমের টানে নাগেশ্বরীতে এসেছিলো। তার ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেম হয় নাগেশ্বরী উপজেলার এক তরুণীর সাথে। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সেই তরুণীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের খবর শুনে সেদিনই ঢাকার কর্মস্থল থেকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে আসেন রাজু আহমেদ। কিন্তু বিয়ে ঠেকাতে না পেরে শুক্রবার রাতে ঢাকায় ফেরার কথা ছিলো তার। এর আগেও একবার রাজু কুড়িগ্রামে এসেছিলো বলে জানান মোফাজ্জল। কীভাবে তার মৃত্যু হলো তা আমরা বুঝতে পারছি না।

Comments (0)
Add Comment