ফুল দিয়ে স্বাগত : চা-চকলেটের আপ্যায়নে মুগ্ধ সেবাপ্রার্থীরা

পুলিশের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা বদলাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উদ্যোগ

জহির রায়হান সোহাগ/শামসুজ্জোহা রানা: পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা বদলাতে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। রয়েছে পুলিশকে আরও জনবান্ধব করার লক্ষ্যও। গতকাল রোববার থানায় যাওয়া সেবাপ্রার্থীদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে এ কার্যক্রমের শুরু করা হয়। এছাড়াও রয়েছে আপ্যায়ন। প্রত্যককেই আপ্যায়ন করা হচ্ছে চকলেট ও চা দিয়ে। থানায় আসা সেবাপ্রার্থীদের জন্য এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। থানায় এসে এমন আতিথ্য পেয়ে মুগ্ধ সেবাপ্রার্থীরাও।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, এর আগে অনেকে পুলিশ কর্মকর্তা থানায় আসা সেবাপ্রার্থীদের চা-চকলেট দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যোগদানের পর থেকে সেবাপ্রার্থীদের চা ও চকলেট দেয়া শুরু করেন থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। তবে এবার চা ও চকলেটের পাশাপাশি ফুল দেয়া শুরু করা হয়েছে। মূলত সাধারণ মানুষের মনে পুলিশ সম্পর্কে থাকা ভুল ধারণা দূর করতেই ব্যতিক্রম এ উদ্যোগ নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। থানায় আগত প্রত্যেককেই মূল ফটকে গোলাপ ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। পরে ভেতরে চকলেট ও চা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। আগত প্রত্যেক সেবাপ্রার্থীই এমন অভ্যর্থনা পান। এমন অভ্যর্থনায় অভিভূত তারা।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মৌমিতা খাতুন নামের এক সেবাপ্রার্থী বলেন, আমার এসএসসি পরীক্ষার মূল সনদ হারিয়ে গেছে। জিডি করতে এসেছি। এর আগে থানায় আসা হয়নি। শুনেছি জিডি করতে টাকা লাগে, কিন্তু থানায় এসে টাকাতো লাগেইনি বরং ফুল দিয়ে বরণ ও চকলেট দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে।
পৌর এলাকার ফার্মপাড়ার বাসিন্দা মধ্যবয়সী জান্নাতুল ফেরদৌসও এসেছিলেন সেবা নিতে। তিনি বলেন, আগে থানায় আসতে ভয় পেতাম। পুলিশ সম্পর্কে অনেক খারাপ ধারণা ছিলো। কিন্তু থানায় আসার পর আমার মতো গরীব মানুষকে গোলাপ ফুল দিলো পুলিশ। ৬৫ বছর বয়সী আব্দুল হান্নানের বাড়ি সদর উপজেলার জাফরপুর গ্রামে। তিনি জানান, থানায় একটি অভিযোগ দিতে এসেছিলাম। থানায় ঢোকার সাথে সাথেই আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান পুলিশ সদস্যরা। আমাকে চেয়ার বসালেন ওসি সাহেব। আগে চা খাওয়ালেন। পরে কথা শুনলেন। কাজ শেষে যাওয়ার সময় চকলেটও খাওয়ালেন তিনি। তাদের সেবায় আমি মুগ্ধ।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমরা পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভেতরে থাকা ভয়ভীতি দূর করতে চাই। পুলিশ সম্পর্কে নেচিবাচক ধারণা পাল্টে দিতেই এই উদ্যোগ। থানায় আসা প্রত্যেক সেবাপ্রার্থীকেই এভাবেই অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। পুলিশকে আরও জনবান্ধব করতে ওই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

Comments (0)
Add Comment