বিশ্ববাজারে কমল জ্বালানি তেলের দাম

স্টাফ রিপোর্টার: দেড় মাস ধরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছিলো। এর প্রভাবে চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশেও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়ে। এতে উৎপাদনকারীরা বিপুল মুনাফা করলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন ভোক্তারা। এ নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতার পর অবশেষে বিশ্ববাজারে কমল জ্বালানি তেলের দাম। খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সংরক্ষিত তেল বাজারে ছাড়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। জ্বালানি তেলের দর ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে নেমে এসেছে। এর আগে ব্যারেলপ্রতি দাম ৮৫ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। বর্তমানে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ও ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। জ্বালানি তেলের দাম কমার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ দেয়া হচ্ছে। জ্বালানিবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রিস্ট্যাড এনার্জির বিজোরনার টনহাউজেন বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। দেশ দুটি সংরক্ষিত তেল বাজারে ছাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।
জানা যায়, কয়েকদিন আগে জো বাইডেন ও শি জিনপিংয়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে বৈশ্বিক জ্বালানি তেল সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে বাইডেন সংরক্ষণ করা তেল বাজারে ছাড়তে চীনের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানান। এরপরই দেশ দুটির সমন্বিত পদক্ষেপের পর লাখো ব্যারেল তেল বাজারে আসে। তবে যুক্তরাষ্ট্র যে কেবল চীনকেই সংরক্ষিত রাখা তেলের ব্যবহার বাড়াতে বলেছে তা নয়, একই অনুরোধ করা হয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের মতো বৃহৎ তেল ব্যবহারকারী দেশগুলোকেও। এর মধ্যে শুরুতেই চীন অনুরোধ রক্ষা করেছে।
টনহাউজেন বলেন, বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন ডিসেম্বরে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আসতে পারে। এটা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে কিংবা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার বৃহত্তর সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে। তবে সংরক্ষিত তেল ছাড়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য সামগ্রিক চিত্র পরিবর্তন নাও করতে পারে।
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টাকে ‘অনর্থক’ বলছে ভারত: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমাতে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে অনর্থক বলে দাবি করেছে ভারত। তাদের মতে, দেশের মজুত থেকে তেল ব্যবহার বিশ্ববাজারে দামের ওপর খুব সামান্যই প্রভাব ফেলবে।
বুধবার ভারতের তেলমন্ত্রী হরদ্বীপ সিং পুরি ব্লুমবার্গ বলেন, কৌশলগত তেল মজুত কখনোই এমন পরিস্থিতির জন্য ছিল না … যদি ভূমিকম্প হয়, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের প্রাদুর্ভাব হয় এবং তেল সরবরাহ বন্ধ থাকে, এটি তেমন কোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতির জন্য।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার দাবি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিজ দেশে বেশ চাপের মুখে রয়েছেন বাইডেন। সেই চাপ কমানোর পাশাপাশি তেলের দাম কমানোর আহ্বানে সাড়া না দেয়া ওপেক প্লাসকে (ওপেকভুক্ত ১৫ দেশ ও রাশিয়া) বিশেষ বার্তা পাঠানোর উদ্দেশে এশীয় দেশগুলোকে তেলের মজুত ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Comments (0)
Add Comment