ভারতে পাচারের সময় সোনার বারসহ আটক ২ : অর্ধকোটি টাকা উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ ও যশোর সীমান্তে বিজিবির চোরাচালান বিরোধী পৃথক অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলাট সীমান্ত থেকে ৬৩টি সোনার বার ও ঝিনাইদহের মহেশপুরের পদ্মপুকুর এলাকা থেকে ৪টি সোনার বারসহ বায়েজিদ মিয়া নামে এক চোরাকারবারীকে আটক করেছে বিজিবি। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর গ্রাম থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা জব্দ করেছে বিজিবি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ও গত সোমবার সন্ধ্যায় পৃথক অভিযান চালিয়ে সোনার বার ও টাকাগুলো জব্দ করা হয়।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সীমান্তে প্রায় কোটি টাকার সোনার বার উদ্ধারের পর এবার মুন্সিপুর সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে অর্ধকোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিজিবি এ খবর নিশ্চিত করেছে। চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যায় দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে সশস্ত্র টহল দল নিয়মিত রাত্রিকালীন টহল দিচ্ছিলো। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তিকে দুটি ব্যাগ হাতে নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করতে দেখেন টহল দলের সদস্যরা। কিছু সময়ের মধ্যে বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিজিবি সদস্যরা এ সময় দুই দলে ভাগ হয়ে ধাওয়া করলে ওই দুই ব্যক্তি তাদের সঙ্গে থাকা দুটি ব্যাগ ফেলে ভারতের দিকে পলিয়ে যান।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) পরিচালক ও অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. ইশতিয়াক বলেন, কুয়াশা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থাকায় ওই দুজনকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকে বাংলাদেশি ৪৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দামুড়হুদা থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া জব্দ করা টাকাগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেয়া হবে।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, ঝিনাইদহ মহেশপুরের পদ্মপুকুর এলাকা থেকে ৪টি সোনার বারসহ বায়েজিদ মিয়া নামে এক চোরাকারবারীকে আটক করেছে বিজিবি। তিনি উপজেলা বাঘাডাঙ্গা গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিনের ছেলে।

ঝিনাইদহ বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়ানের পরিচালক লে. কর্নেল মাসুদ পারভেজ রানা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় দত্তনগর হয়ে একটি ইজিবাইকে স্বর্ণের চালান বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত এলাকার দিকে যাবে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পদ্মপুকুর ডিগ্রি কলেজের কাছে অভিযান চালায় বিজিবি। ওই সময় একটি ইজিবাইকের গতিরোধ করে চালক বায়েজিদ মিয়াকে আটক করা হয়। পরে তার কাছে কসটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় রাখা ৪টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এগুলো ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে বিকেল ৩টার দিকে মাধবখালী বিওপির ময়নাগাড়ী মাঠে অভিযান চালায় বিজিবি। সেসময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে বস্তায় মোড়ানো ৪টি এয়ারগান উদ্ধার করা হয়। আটককৃত আসামিকে মামলাসহ মহেশপুর থানায় ও উদ্ধারকৃত এয়ারগান জীবননগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

এদিকে, যশোরের শার্শার অগ্রভুলাট সীমান্তে বিজিবির খুলনা ব্যাটালিয়নের (২১ বিজিবি) সদস্যরা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে ৬৩টি সোনার বার উদ্ধার করে। এ সময় সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুর রাজ্জাক (৪৮) নামের একজনকে আটক করেছে বিজিবি।

খুলনা ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা গেছে, আটক আব্দুর রাজ্জাক শার্শা উপজেলার বারোপুতা গ্রামের সমসের আলীর ছেলে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ (গতকাল) বিকেলে বিজিবি অগ্রভুলাট সীমান্তে অভিযান চালায়। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক মোটরসাইকেল চালিয়ে সীমান্ত এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সন্দেহের ভিত্তিতে বিজিবি সদস্যরা আব্দুর রাজ্জাকের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তল্লাশি করে। এ সময় ওই মোটরসাইকেলের চেসিসের অংশ থেকে কৌশলে লুকিয়ে রাখা ৬৩টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। পরে বিজিবি সোনা ও মোটরসাইকেলসহ আব্দুর রাজ্জাককে আটক করে। বিজিবির দাবি, জব্দ করা সোনা ও মোটরসাইকেলের আনুমানিক বাজারমূল্য ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। খুলনা ব্যাটালিয়নের (২১ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর রহমান বলেন, সোনার চালানটি ভারত থেকে চোরাইপথে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছিলো। আটক ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।

Comments (0)
Add Comment