স্ত্রীর মৃত্যুর ১১ দিন পর সড়ক দুর্ঘটনায় কাঁচামাল ব্যবসায়ীর মৃত্যু

বেগুন বিক্রি করে বাড়ি ফেরা হলো না নেহালপুরের ফরজ আলীর

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার গোষ্টবিহার গ্রামের ত্রিমোহনীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক কাঁচামাল ব্যাবসায়ির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুতস্পৃষ্টে স্ত্রী মৃত্যুর ১১ দিনের মাথায় বাড়ির গৃহকর্তার মৃত্যুতে নেহালপুর গ্রামের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এদিকে দুর্ঘটনার সাথে সাথে মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়েছে গড়াইটুপি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করতে পারলেও কাউকে আটক করতে পারেনি।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার গোলাম মিস্ত্রির ছেলে কাঁচামাল ব্যবসায়ী ফরজ আলী (৫৫) গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে করিমনে করে বেগুন নিয়ে সরোজগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিলেন। এসময় গড়াইটুপি ইউনিয়নের গোলাপনগরের অদুরবর্তী গোষ্টবিহার ত্রিমোহনী মোড়ে করিমন বাঁক নিলে বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা দু’জন মোটরসাইকেল আরোহী করিমনের সামনে ধাক্কা মারে। এতে করিমন চালক ফরজ আলী পাকা সড়কের ওপর মুখ থুবড়ে পড়ে যান। আহত ফরজ আলীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এদিকে রক্তাক্ত অবস্থা দেখে মোটরসাইকেল চালক গড়াইটুপি গ্রামের বাতেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম এবং পেছনে বসে থাকা একই গ্রামের রবিউল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি মোটরসাইকেল ফেলে সটকে পড়েন। খবর পেয়ে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনায় পড়া হিরোহো-া গ্লামার মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে গেলেও কাউকে আটক করতে পারেনি।
তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই মীর মেজবাহুর বলেন, মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দর্শনা থানর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লুৎফুল কবির বলেন, নিহতের পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিহত ফরজ আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায়, তিনি ২ মেয়ে ও ১ ছেলের বাবা। গত ১ জানুয়ারি টর্চালাইটে চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুত শর্টসার্কিটে তার স্ত্রী আলেয়া বেগমের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। স্ত্রী মৃত্যুর ১১ দিনের মাথায় বাড়ির একমাত্র উর্পাজনক্ষম গৃহকর্তার মর্মান্তিক এ মৃত্যু। একটি পরিবারে পরপর দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করার প্রক্রিয়া চলছিলো বলে জানাগেছে।

Comments (0)
Add Comment