হার না মানা এক আপোষহীন মহাকাব্যের প্রধান তিনি

স্টাফ রি‌পোর্টার: সাধারণ গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের প্রশ্নে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম, অন্যায্য কারাবরণ। হার না মানা এক আপোষহীন মহাকাব্যের প্রধান চরিত্র বেগম খালেদা জিয়া।

খালেদা খানম পুতুল, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর শহরে জন্ম নেওয়া এই সাধারণ মানুষটিই কর্মগুণে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য এক শ্রদ্ধার আসনে। সময়ের সাথে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হয়ে ওঠেন গণমানুষের নেত্রী, তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়ার বাবা ইস্কান্দর মজুমদার। মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। পিতামহ হাজী সালামত আলী, মাতামহ জলপাইগুড়ির তোয়াবুর রহমান। তাদের আদি নিবাস ফেনী ফুলগাজীর শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ি।

বাবা ইস্কান্দর মজুমদার ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। ১৯১৯ সালে ফেনী থেকে তিনি যান জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে মেট্রিক পাস করেন। পরে জড়ান চা ব্যবসায়ে। ১৯৩৭ সালে জলপাইগুড়িতে বিয়ে করেন। সেখানে বসবাস করেন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৪ সালের ১৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন ইস্কান্দর মজুমদার।

বেগম খালেদা জিয়ার মা বেগম তৈয়বা মজুমদার ছিলেন একান্তভাবে একজন গৃহিণী। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেই থাকতেন।

ছোট ভাই সাঈদ এস্কান্দার সেনাবাহিনীর মেজর পদ থেকে অবসরের পর ২০০১ সালে বিএনপি থেকে ফেনী-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

খালেদা খানম পুতুল পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন দিনাজপুর গভমেন্ট হাই স্কুল থেকে।

১৯৬০ সালের আগস্টে তখনকার সেনাবহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনের পর তার পরিচিতি বেগম খালেদা জিয়া নামে।

রাজনীতিতে আসার আগ পর্যন্ত একজন সাধারণ গৃহবধূর জীবন যাপন করেছেন তিনি। দুই পুত্র তারেক রহমান পিনু ও আরাফাত রহমান কোকোকে লালন পালন ও ঘরের কাজেই সময় কাটাতেন। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীনও রাজনীতিতে বেগম জিয়ার উপস্থিতি ছিল না।

প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবির মুখে রাজনীতিতে তার অভিষেক। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্রের পক্ষে আপোষহীন নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির ইতিহাসে হয়ে ওঠেন আপোষহীন নেত্রী।

তবে, দিন শেষে তিনিও মা। স্বামীর অবর্তমানে একা দায়িত্ব নিয়ে বড় করেছেন দুই ছেলেকে। এক এগারোর সময় অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদেশে পাঠাতে বাধ্য হন মঈনুদ্দিন ফখরুদ্দিন সরকারের নির্যাতনের শিকার বড় ছেলে তারেক রহমানকে। ২০১৫ সালে শেষ বিদায় জানাতে হয় ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে।