খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি

সম্পাদকীয়

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব এবং দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব নির্দেশনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-বিলাসী পণ্য আমদানিতে আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে; খাদ্য, সার ও জ্বালানির উপকরণ আমদানির জন্য এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিতে হবে; সব খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বাজেটে বরাদ্দসীমার মধ্যে রাখতে হবে; বর্তমানে ডলারের দামের যে ব্যবধান আছে, তা পর্যায়ক্রমে সমন্বয় করতে হবে। এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়ানোর বিষয়েও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়। বিদ্যমান সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী সব পক্ষকে করণীয় সম্পর্কে সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে সব খাতে মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া সংকট মোকাবেলায় জনগণের মধ্যেও সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তোলার জন্য প্রচার চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা আশা করবো, এসব নির্দেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো অবিলম্বে পদক্ষেপ নেবে।

বিভিন্ন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংকটের সবচেয়ে বড় প্রভাবটি পড়বে আগামী বছর। এ কথা মাথায় রেখে যে বিষয়টি নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো খাদ্য নিরাপত্তা। এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ খাদ্যপণ্য উৎপাদন বাড়ানোর দিকে। এজন্য কৃষকের হাতে সঠিক সময়ে বীজ, সার ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। যেসব খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোও যথাসময়ে দেশে পৌঁছুতে হবে। এদিকে ডলার সংকট ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংকগুলোয় এলসি খোলার মতো পর্যাপ্ত ডলার নেই।

এ কারণে খাদ্য, জ্বালানি ও সার আমদানি করার এলসিও কম খোলা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে কৃষি ও শিল্প উভয় খাতেই। অথচ সার ও ডিজেল আমদানি কম হলে কৃষি উৎপাদন বিঘিœত হবে। খাদ্যপণ্য আমদানি কম হলে দেশে খাদ্যের দাম বেড়ে যাবে। তাই এলসি খুলতে হবে দ্রুত। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী খাদ্য, জ্বালানি ও সার আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা মনে করি, সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা সবচেয়ে জরুরি। তাই যতো সমস্যাই থাকুক, এলসি খুলতে যেন বিলম্ব না হয়ে যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

 

Comments (0)
Add Comment