জীবননগরে আম্ফানের আঘাতে নিহত-২

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে দুই জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বৈদ্যনাথপুরের বালক শামীম (৯) গাছ চাপায় ও পোষ্টঅফিসপাড়ার বৃদ্ধা মোমেনা খাতুন (৮৫) ঘর চাপা পড়ে মারা যান। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন বহু মানুষ। প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে চলা ঝড়ের তান্ডবে বহু কাঁচা-পাকা বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্থ হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে গাছ-গাছালি ও বাগানের কলাগাছ। ঝড়ের তান্ডবে গাছের আম ও লিচুর সিংহভাগ ঝরে পড়েছে। ক্ষেতের ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুুকুরের মাছ। বৈদ্যুতিক সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জানা যায়, ঝড়ের তান্ডব শুরু হলে পোষ্টঅফিসপাড়ার মৃত ইউছুফ আলীর স্ত্রী মোমেনা খাতুন চালা চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বৈদ্যনাথপুরের রেজাউল ইসলামের ছেলে শামীম তাদের টিনের বাড়িতে পরিবারের অন্যদের সাথে বসে ছিলো। এসময় ঘরের সাথে থাকা জাম গাছ ভেঙ্গে পড়লে গাছ চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। শহরের মুক্তিযোদ্ধাপাড়ার মুস্তাকীম (২০) ও মর্জিনা খাতুনসহ (৪৮) বহু মানুষ ঝড়ের তান্ডবে আহত হয়েছে।
সুবলপুরের মিজানুর রহমান ও মুক্তারপুরের সাইফুল ইসলাম জানান, বাগানের আম ও লিচুর সিংহ ভাগ ঝরে পড়েছে। আম নেয়ার লোক নেই। এ ঘটনায় তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। গোয়ালপাড়ার হাফিজুর রহমান জানান, মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মনোহরপুরের আকিমুল ইসলাম জানান, তার পুকুরের প্রায় ৬০ মণ মাছ পানির ¯্রােতে ভেসে গেছে। পেয়ারাতলার আড়ৎ ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের প্রধান জানান, ঝড়ের তান্ডবে তার নির্মাণাধীন আটো রাইস মিলটি বিধ্বস্থ হয়ে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভোর থেকে বিকেল অব্দি সড়কের ওপর ভেঙ্গে পড়া গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলো। আম্ফানের তান্ডবে বন্ধ হয়ে গেছে গ্রামীণ, বাংলাালিংক ও রবির মোবাইল নেটওয়ার্ক। ফলে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানার সুযোগ হয়নি এবং সেই সাথে দায়িত্বশীল কারো মতামত নেওয়াও সম্ভব যায়নি।

 

Comments (0)
Add Comment