জীবননগরে সাংবাদিক সম্মেলনে ময়েন চেয়ারম্যান স্বর্ণ লোপাটের সাথে আমি জড়িত নয়

জীবননগর ব্যুরো : ফেইসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি নেতা ও উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন ময়েনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১ টায় উপজেলার গোয়ালপাড়া বাজারে এই বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সীমান্ত ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’আপনারা জানেন বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে বিএনপি ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিএনপির এই ভালো অবস্থান ও দলের সুনাম নষ্ট করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপি।

আপনারা খেয়াল করেছেন যে, সম্প্রতি গোয়ালপাড়ার ৫ জনকে অপহরণ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তবে আপনারা লক্ষ্য করবেন, উদ্ধার হওয়ার পর সাধারণ কৃষক স্বপন আলীসহ আরও দুজন জানিয়েছেন, তাদের অপহরনের সঙ্গে আব্দুল মজিদ, শাহিন, সাইফুল, রুহুল ও লালন জড়িত। যারা অপহরন করেছে তারা সবাই যশোর এলাকার ভারতীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের লোক। জীবননগরের আর কেউ অপহরনের সঙ্গে জড়িত ছিল না। একই কথা জানিয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। তারপরও জীবননগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মঈন উদ্দীন ময়েনসহ বিএনপি নেতাদের নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন,
আপনারা অপহরণ হওয়া ব্যক্তি ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বললে জানতে পারবেন, মঈন উদ্দীন ময়েন অপহরনের ঘটনার ২-৩ দিন পর অপহৃত একজনের আত্মীর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাদের অনুরোধে গোয়ালপাড়া গ্রামে যান। পরে আব্দুল মজিদসহ অপহরনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে বিষয়টি সমাধান করতে না পারায় তিনি প্রশাসনের দারস্ত হওয়ার জন্য বলেন। এ ঘটনার সঙ্গে এর বাইরে তার কোনো সম্পৃক্তাতা নেই। তিনি উপকার করতে গিয়ে নানা মিথ্যা অপবাদের শিকার হচ্ছেন। আমরা এই মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা সাংবাদিকের বিষয়টি আরও তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

এছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ময়েন বলেন, আমি ঘটনার সময় ঢাকাতে অবস্থান করছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে যার ফলে আমার ব্যক্তিগত ও দলীয় সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এদিকে অপহৃত স্বপ্নের পিতা আনার জানান, জিজ্ঞাসা বাদের জন্য স্বর্ণচোরা চালানকারীরা আমাদেরকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর চৌগাছায় পৌঁছালে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে রেখে দেয়। আমাদেরদের কে তারা প্রচন্ড মারধর করত। মাফিয়াদের একটাই প্রশ্ন হারিয়ে যাওয়া ৫ কেজি স্বর্ণ ফেরত দিতে হবে। আর এ কারণে আমাদেরকে মারাত্মক নির্যাতন সহ আমার পুত্র স্বপনের ঘাস কাটা মেশিনের সাহায্যে চারটি আঙ্গুল কেটে দেয় ।পরবর্তীতে পুলিশ যেয়ে আমাদের উদ্ধার করে।

এদিকে অপহৃত আবুল জানান, স্বর্ণ হারিয়ে যাওয়ার দিন আমরা মাঠে ঘাস কাটছিলাম। আমাদের সামনে দিয়ে স্বপন দৌড়িয়ে যায় এবং পেছনে বিজেবি ছিল এটা আমরা দেখেছি আর সেটাই আমারদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। আর এজন্য স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত মাফিয়ারা আমাদেরকে তুলে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে।সাংবাদিক সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ওসমান গনি, সহ-সভাপতি বিমলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বদর উদ্দিন বাদল, যুগ্ম সম্পাদক আল ইমরান টিটো, সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব আলী বিশ্বাস, মহিলা নেত্রী পেয়ারা বেগম, সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ফকিন্নি বেগমসহ সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতাকর্মী এবং অপহৃত পাঁচজন ও গ্রামবাসীসহ মহিলারা উপস্থিত ছিলেন।