স্টাফ রিপোর্টার:গাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৭)। এ নিয়ে এ ঘটনায় তিন ফায়ার ফাইটারসহ মারা গেছেন ৪ জন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে একই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ফায়ার সার্ভিসের ২ সদস্য ও বাবু নামে এক দোকান কর্মচারি নিহত হন।
খন্দকার জান্নাতুল নাঈম শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের খন্দকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন। এক সন্তানের জনক জান্নাতুল নাঈমের বাবা খন্দকার মোজাম্মেল হক এবং মা দেলোয়ারা বেগম।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহিন আলম যুগান্তরকে মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর সাহারা মার্কেটের একটি কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আগুন নেভাতে গিয়ে তিনি দগ্ধ হন। তার শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে যায়। ওই ঘটনায় মোট চারজন ফায়ার সার্ভিস সদস্য গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর মারা যান ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ, ২৪ সেপ্টেম্বর ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, গতকাল মারা যান দোকান কর্মচারী আল আমিন বাবু ও আজ মারা গেলেন জান্নাতুল নাঈম।
খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের খন্দকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৪ সালে মোল্লার টেক উদয়ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, পরবর্তীতে ফুলপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তিনি বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন। চাকরি জীবনে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে স্টেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হন। চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের পর সর্বশেষ তিনি টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ মিশনে অংশ নেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৫১ জন সদস্য দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। তাদের সর্বশেষ সংযোজন এখন খন্দকার জান্নাতুল নাঈম।