স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামে দুটি পরিবারের বসতভিটা অপকৌশলে দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে গ্রামের আমিরুল গংদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দুইটি পরিবার বসত করলেও আমিরুল গং একের পর এক দখলের অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবার দুটি বসত ভিটা হারিয়ে নানা ধরনের হুমকির মধ্যে রয়েছে। জানা যায়, নওদা মটমুড়া গ্রামের স্থানীয় মৃত সুন্নত আলী গত ইং ২২/০৭/১৯৯২ তারিখে রেজিস্ট্রি ৭২৫৬ নং দলিল মূলে তার নিজ স্ত্রী আমেনা খাতুন ও পুত্রবধূ জরিনা খাতুনের নামে ০.৩৩ একর জমাজমি হস্তান্তর করেন আর.এস ৫৫১ নম্বর খতিয়ানের ১৮ দাগের ০.৮৮ একর জমাজমির মধ্যে থেকে। উক্ত দলিল মূলে আমেনা খাতুন ও জরিনা খাতুন ০৯/০২/১৯৯৩ তারিখের ১০৪২ নং ও ০৪/১০/১৯৯৫ তারিখের ৯১৬৯ নং দলিল মূলে ০.১৩ একর জমাজমি হস্তান্তর করেন মো. ছলিম উদ্দিনের স্ত্রী মোমেনা খাতুনের নিকট এবং মুসাব, তাছেন ও পিয়ার আলীর নিকট ০.১৩ একর। মুসাব, তাছেন ও পিয়ার আলীর নিকট থেকে একই গ্রামের দুখু মিয়ার পুত্র আব্দুস সামাদ ক্রয় করেন ০.১৩ একর জমি। ভুক্তভোগী মোমেনা খাতুন ০.১৩ একর জমাজমি খারিজ করে এবং আব্দুস সামাদ দলিল মূলে বসতবাড়ি নির্মাণ করে। তারা অন্তত ৩০ বছর যাবত ওই জমাজমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন এবং জমির দখল, ভোগদখল ও ক্রয় সংক্রান্ত দলিলাদি সংরক্ষণ করে রেখেছেন। অন্যদিকে, মৃত সুন্নত আলীর জামাতা আমিরুল ইসলাম একই খতিয়ানের ২০ নং দাগে জমি ক্রয় করেছেন। জানাজায় মৃত সুন্নত আলী জিবীত থাকা কালে একই খতিয়ানের ২০ নং দাগের ০. ৪৮ শতাংশের জমাজমির মধ্যে কয়েকটি দলিল মূলে বিক্রয় করেছেন ০.৭১ শতাংশ জমাজমি। ঐ খতিয়ানের ২০ নং দাগ থেকে জমি ক্রয় করেছেন সর্বশেষ মৃত সুন্নত আলীর জামাতা আমিরুল ইসলাম। আর এস মৌজা ম্যাপ অনুসারে ২০নং দাগ ও ১৮নং দাগ দুটি ভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানের জমাজমি। তবে সম্প্রতি আমিরুল ইসলাম ২০নং দাগে জমি ক্রয় করে ১৮ নং দাগের জমিতে দখল নেয়ার চেষ্টা করছেন। ঐ গ্রামের সাধারণ মানুষের নিকট থেকে জানা যায়, সুন্নত আলীর জামাতা, মোমেনা ও আব্দুস সামাদের রেজিস্ট্রিকৃত দলিল অস্বীকার করে আমিরুল ইসলাম দাবি করে আমি জমি ক্রয় করেছি ২০নং দাগ থেকে আমার দলিলে ১৮ নং দাগ উঠানো না থাকলেও মূল মালিকের অন্য দাগের সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করেন। ছলিম উদ্দিন এর স্ত্রী মোমেনা খাতুন ও ভুক্তভোগী আব্দুস সামাদ ঐ গ্রামে সংখ্যা লঘু হওয়ায় আমিরুল ইসলাম গ্যাং বাহিনী ও বংশীয় জোরে ভুক্তভোগীদের বসতবাড়ি উচ্ছেদ সহ জমি দখলের অপচেষ্টা চলমান রেখেছে।
স্থানীয় সালিস বৈঠক, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক ও বিচারিক স্তরে বারবার উত্থাপিত হয়েছে এ বিরোধ। আলোচনা ও প্রমাণে উঠে আসে ১৮ নং দাগের প্রকৃত মালিক দলিল ও খারিজ মূলে মোমেনা খাতুন,ও আব্দুস সামাদ। গাংনী সেনা ক্যাম্পের আলোচনা সিদ্ধান্তে আমিরুল ইসলাম ক্ষতি পূরণ দিবে বলে অঙ্গীকার করেন এবং ঐ গ্রামে একাধিক বার স্থানীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণসহ জমিতে শান্তিপূর্ণ বসবাস নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেন, আমিরুল গ্যাং এখনো এলাকায় আত্মগোপনে অপকৌশলে জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানান, তারা টাকা দিয়ে জমি কিনে এখানে ৩০ বছর ধরে বসবাস করছেন। অথচ তাদের জমাজমি ও বসতবাড়ি উচ্ছেদ নিয়ে কুচক্রান্ত চলছে। ভুক্তভোগী দুইটি পরিবার প্রাণনাশ সহ রীতিমতো আতঙ্কে আছেন। নিজের ক্রয় করা ও বসতভিটা হিসেবে ব্যবহৃত জমিতে দিন কাটাচ্ছেন দুশ্চিন্তায়। কৌশলী প্রতিপক্ষ কখন কোন ফন্দি আঁটে, সেই ভয়ে তারা আইনি সহায়তা এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন। প্রকৃত মালিকদের সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ বসবাসের নিশ্চয়তার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তারা।