দর্শনা অফিস: দর্শনার সুলতানপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত ইব্রাহিম বাবুর লাশ ফেরত দেয়নি। কবে ও কখন দেবে তা নিশ্চিত জানা যায়নি। লাশ ফিরে পেতে অধির আগ্রহের প্রহর গুনছে পরিবারের সদস্যরা। গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে সীমান্তে পতাকা বৈঠকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। গত পরশু বুধবার দুপুর ১টার দিকে দর্শনার সুলতানপুর সীমান্তের ৭৯নং মেইন পিলারের ভারতের অভ্যান্তরে বিএসএফ’র গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ঝাঁজাডাঙ্গা মাদরাসাপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে এক সন্তানের জনক ইব্রাহিম হোসেন বাবু’র (৩০) দুপুর ঠিক ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে সীমান্তবর্তী গালার মাঠে গরুর ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তার স্ত্রী জেসমিন খাতুন ও বাবা। অভিযোগ উঠেছে, বাবু বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে বিভিন্ন ধরণের চোরাচালানের সাথে জড়িত। প্রতিদিনের মতো ওই দিনও বাবুসহ ৫/৬জন ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানার হালদারপাড়া সীমান্তে চোরাচালানী পণ্য বহন করার সময় টহলরত বিএসএফ সদস্যরা ধাওয়া করে। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা চোরাচালানীচক্রকে লক্ষ্য করে পরপর ২ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে। ইব্রাহিম বাবু গুলিতে আহত হলে তাকে উদ্ধার করে বিএসএফ সদস্যরা নেয় কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালে। একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, হাসাপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান বাবু। বাবুর লাশ বিকেল ৪টার দিকে রাখা হয় কৃষ্ণগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে। গত পরশু বুধবার বাবুর লাশ কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। ঘটনার পরপরই বিজিবি প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএসএফ’র এ হত্যাকান্ডের ঘটনায়। চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্ণেল নাজমুল হাসান জানান, খবরটি পাওয়ার পর ভারতের ৩২-বিএসএফ’র কমান্ড্যান্ট সুজিত কুমারকে ফোন দিলে তিনি জানান, দুপুরে কয়েকজন বাংলাদেশি স্বর্ণ পাচারকারী সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেইন পিলারের ২০০ গজ ভারতের অভ্যান্তরে প্রবেশ করে। বিএসএফ’র টহলদল তাদের ধাওয়া করে। এ সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়। একদিন পেরিয়ে গেলেও বিএসএফ ফেরত দেয়নি বাবুর লাশ। লে. কর্ণেল নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে সুলতানপুর সীমান্তে কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যার কড়া প্রতিবাদ করা হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কোনোভাবেই গুলি করে হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশি নাগরিক ইব্রাহিম হোসেন বাবুর লাশ ফেরত চাইলে তারা অনতিবিলম্বে ফেরত দেয়ার কথা জানালেও সুনির্দিষ্ট সময় এখনো জানায়নি। এদিকে বাবুর পরিবারের সদস্যরা লাশ ফেরত পেতে অধির আগ্রহে প্রহর গুনছে। আসলে কবে ও কখন লাশ ফেরত পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত করেও বলতে পারেনি কেউ।