স্টাফ রিপোর্টার:রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম সাগরসহ ৩১ জন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পুরো জাতি শোকস্তব্ধ। দুর্ঘটনায় শতাধিক হতাহতের মধ্যে উঠে এসেছে এককথায় বীরোচিত লড়াই করা এই তরুণ পাইলটের নাম।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি এক দীর্ঘ ও আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে এই দুর্ঘটনা এবং পাইলট তৌকিরকে ঘিরে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পাঠকদের জন্য তাঁর পোস্টের সারাংশ তুলে ধরা হলো—
হিমি লেখেন, ‘মর্মান্তিক হলেও, দয়া করে পাইলটকে দোষ দেবেন না। তিনি চেষ্টা করেছেন, তিনি সত্যিই চেষ্টা করেছেন। তিনি জানতেন এটা একটি স্কুল, তিনি জানতেন আশপাশে শিশু রয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লড়েছেন, বিমানের গতি সরিয়ে নিতে চেয়েছেন। তিনি নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছেন। তিনি সেই বিমানের সাথেই ঝরে গেছেন।’
তিনি আরও লেখেন, করেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে সামগ্রিকভাবে অসম্মান করবেন না। তারা আমাদের রক্ষা করে, দেশের জন্য জীবন বাজি রাখে প্রতিদিন। কিন্তু এর মানে এই না যে আমরা চুপ করে থাকবো। আমাদের কঠিন প্রশ্ন করতে হবে। আমাদের স্বচ্ছতা দাবি করার অধিকার আছে। আর যদি কোথাও গাফিলতি থাকে, যদি কারও ভুল সিদ্ধান্ত প্রাণহানির কারণ হয়ে থাকে, তবে তাকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দোষ দিন না ককপিটে থাকা মানুষটিকে, দোষ দিন তাকে, যে জনবহুল শহরের ওপরে প্রশিক্ষণ ফ্লাইট চালানোর অনুমোদন দিয়েছে। আসল দায়িত্ব সেখানেই।’
হিমি লেখেন, ‘আর দোষ দিন তাদের, যারা এখনো পর্যন্ত আমাদের পুরোনো যুদ্ধবিমান দিয়ে উড়তে বাধ্য করছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, কেন আমরা এখনো ১৯৬০ সালের নকশায় তৈরি এবং ২০১৩ সালে যার উৎপাদন বন্ধ হয়েছে, সেই চীনে তৈরি F-7 যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছি?’
এই বিমানগুলো ব্যবহারে পাইলটদের পাশাপাশি মানুষের জীবনকেও ঝুঁকিতে ফেলছে বলে অভিযোগ করেছেন হিমি। তিনি বলেন, ‘এই বিমানগুলো শুধু পুরোনোই নয়, আধুনিক শহুরে অভিযানের জন্য সম্পূর্ণভাবে অনুপযুক্ত। এগুলো ব্যবহার করে আমরা শুধু আমাদের পাইলটদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছি না, বরং নিচের অসংখ্য সাধারণ মানুষের জীবনও হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি। এটা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটা এক বিশাল ব্যর্থতা চিন্তাভাবনার, পরিকল্পনার, এবং নেতৃত্বের। তিনি শহীদ হয়েছেন বীরের মতো। স্যালুট জানাই তোমাকে, ভাই ।’