দামুড়হুদার কানাইডাঙ্গায় অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেল কৃষকের কলা চাষের স্বপ্ন

রবিউল ইসলাম বাবু: দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমানের এক বিঘা কলা বাগান অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেল, নষ্ট হল স্বাবলম্বীর স্বপ্ন। ঋণ করে পরের জমি লিজ নিয়ে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরার আশায় শুরু করেছিলেন কলা চাষ। ৩/৪ মাস আগেই অনেক টাকা খরচ করে কলা গাছ লাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু অতিবৃষ্টির ফলে জমিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে দীর্ঘ সময় ধরে। পানি আটকে থাকায় তার সব গাছ এখন অকেজো হয়ে পড়েছে।
মতিয়ার রহমান জানান, আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম কলা বিক্রি করে পরিবারের অভাব ঘুচাবো,ঋণ শোধ করবো। কিন্তু বৃষ্টিতে গাছ বাঁচেনি। এখনো কিছু সময় আছে, তাই আগেভাগেই গাছ কেটে ধান লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জমিতে বসে আরও বলেন, প্রতিটি কলা গাছের পেছনে অনেক শ্রম, টাকা আর আশা জড়িত ছিলো। গাছগুলো যেভাবে নষ্ট হয়ে গেলো, মনটা ভেঙে গেছে। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে তো চলবে না। তাই নতুন করে কলা গাছ কেটে ধানের আবাদ শুরু করতে চাই।
স্থানীয় চাষিরা জানান, মতিয়ার রহমান একজন সৎ ও খাঁটি পরিশ্রমী কৃষক। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ঋণ নিয়ে পরের জমি লিজে নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। কলা চাষে প্রচুর খরচ লাগে। জমি তৈরি, সার, চারা, বাঁশ এসব বাবদ অনেক খরচ করেছেন। কিন্তু এখন ফল আসার আগেই কলা গাছ কেটে ফেলতে হচ্ছে। জমিতে এখনো পানি জমে আছে, তাই চাষাবাদ করতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
পাশের জমি চাষিরা জানান, শুধু মতিয়ার নন, ওই এলাকার আরও অনেক কৃষক একই ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে নিচু এলাকার জমিগুলোতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে কলা, সবজি ও অন্যান্য ফসলও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুর্যোগের প্রভাবেই এমন ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে প্রান্তিক কৃষকদের। তবে না জানি কতদিন ধরে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলবে। প্রান্তিক কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে যদি সরকারি ভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন তাহলে এবিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।