দামুড়হুদায় টিনের চাল ঘরে বন বিভাগের কার্যালয় বণ্যপ্রাণী ধরার নেই কোনো সরঞ্জাম নেই প্রশিক্ষণ

হাবিবুর রহমান: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা বনবিভাগের আধাপাকা চারচালা জরাজীর্ণ ঘরে চলছে অফিসের কার্যক্রম। একটু বৃষ্টিতে ভেসে যায় কক্ষ রক্ষনাবেক্ষণে ঝুঁকির মধ্যে থাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। উপজেলাটি বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর অভয়ারণ্য। বনকর্মকর্তার নেই হিংস্র বণ্যপ্রাণী ধরার কোনো প্রশিক্ষণ নেই প্রাণী সংরক্ষণ করার মতো কোন সরঞ্জাম। বনবিভাগ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯-৯০ সালে নির্মিত চারচালা টিনের ছাউনি দেয়া আধাপাকা ছোট অফিস কক্ষ। অফিসের পূর্বপাশে রয়েছে নার্সারি। দীর্ঘদিনের ছাউনি হওয়ায় টিন নষ্ট হয়ে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, শুধুমাত্র অফিস কক্ষের উপরের টিনগুলো পরিবর্তন করা হলেও সামনের বারান্দা জরাজীর্ণ রয়েগেছে। সামান্য বৃষ্টিতে পানিতে ভেসে যায় অফিসের সামনের অংশ। এখানে রয়েছে বিপুল পরিমাণ মেছো বিড়ালসহ নানা ধরনের বন্যপ্রাণী। অনেক সময় এসব প্রাণী ধরার প্রয়োজন পড়ে, মেছো বিড়ালসহ বিভিন্ন ধরনের সাপ ধরার প্রয়োজন পড়লেও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যেমন হিংস্রপ্রাণী ধরার প্রশিক্ষণ নেই তেমনি নেই কোনো ধরনের সরঞ্জামাদি। অনেক সময় কিছুপ্রাণী অসুস্থ হয়ে থাকে আবার সাধারণ মানুষ বিভিন্ন সময় এসব প্রাণীর অত্যাচার থেকে রেহায় পেতে এগুলোকে মেরে আহত করে আটক করে রাখে। পরে বন বিভাগ সেগুলো উদ্ধার করে। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন হলেও রাখারমতো সরঞ্জাম না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হয়। সে ক্ষেত্রে উপজেলা অফিস থেকে বিভাগীয় অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে এনে সকল কায্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। দামুড়হুদা উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, অফিসটির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে, এখানে বসে কাজ করার মতো কোন পরিবেশ নেই। দীর্ঘদিনের পুরাতন আধাপাকা চারচালা বিশিষ্ট অফিস কক্ষের মধ্যে রয়েছে একটি স্টোর রুম ওই রুমেই কাজ করতে হয়। রুমের সামনের টিনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানিতে ভেসে যায় মানুষ দাঁড়ানোর মতো অবস্থা থাকে না। অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে রক্ষা করতে সর্তকর্তা অবলম্বন করতে হয়। এছাড়াও আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে উপজেলাটি পশুপাখির অভয়ারণ্য এখানকার মাঠ ঘাট ঝোঁপ ঝাড়ে রয়েছে বিপুল সংক্ষক মেছো বিড়াল, হুতুমপেচা, বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখি ও গুইসাপসহ বিভিন্ন ধরনের সাপেরও দেখা মেলে। অনেক সময় কৃষকরা এদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে তাদের ক্ষেত থেকে তাড়াতে গিয়ে আহত করে আবার কিছু সময় আটকও করে রাখে। কিন্তু এগুলো উদ্ধার করতে তাদের আটকানোর মতো কোনো সরঞ্জাম ও রাখার মতো খাঁচা না থাকায় আমাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অসুস্থ প্রাণীগুলো উদ্ধার করে আটকে চিকিৎসা দেয়া দুসাধ্য হয়ে পড়ে। এগুলো উদ্ধারের জন্য সুদুর ঢাকা ও খুলনা বিভাগীয় অফিসের সরণাপন্ন হতে হয়। তাদের আসতে অনেক সময় লেগে যায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের মানসম্মত অফিসসহ প্রযোজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ ও সর্বোচ্চ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে আমরা নিজেরা সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবো। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝোঁপঝাড়, বিল-বাওড় থাকায় প্রচুর পরিমাণ প্রাণী রয়েছে। বন বিভাগকে বেশিরভাগ সময় এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। অনেক সময় কৃষকদের ধান, পাট, ভুট্টা ক্ষেত বিনষ্ট করে। এতে ক্ষিপ্তহয়ে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের জাল পেতে আটক করে ও মেরে আহত করে। পরে এগুলোকে বন কর্মকর্তারা উদ্ধার করে। অনেক প্রাণীর চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এগুলো ধরা বা রাখার মতো সরঞ্জাম না থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এমনকি হিংস্র প্রাণী ধরারও তেমন প্রশিক্ষণ নেই। তবে বনবিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রেখেছে দ্রুত সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।