মেহেরপুর অফিস: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছিলো, তা ছিলো অবধারিত। এই ঘটনার কোনো বিকল্প ছিলো না। গণরোষ, গণআকাক্সক্ষা এবং গণঅভ্যুত্থানের আগুন বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নিজেই জ্বালিয়ে রেখেছিলেন বছরের পর বছর। বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মেহেরপুর আজ এবং আগামী” শীর্ষক সুধীজনসভা। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনির হায়দার বলেন, যা ঘটেছে তা অনিবার্য ছিলো, কারণ মানুষের ধৈর্যের সীমা ছিলো না আর। যা যা করলে একটা জাতিকে বিদ্রোহ করতে হয়, শেখ হাসিনা তার সব কিছুই করে দেখিয়েছেন দমন-পীড়ন, গুম-খুন, ভোটাধিকার হরণ, বিচার বিভাগের দুর্ব্যবহার এবং প্রশাসনের দলীয়করণ। সভায় সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। উপস্থিত ছিলেন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক অঙ্গন ও সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিলুর রহমান খান, মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা তাজ উদ্দিন খান, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক শাকিল আহমেদ, সরকারি পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান খান স্বপন, মেহেরপুর জেলার ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আতিফ আহমেদ, এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, বিগত শাসনামলে মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ, রাজনীতির ওপর নিষ্ঠুর শাসন, প্রশাসনের ভয়াবহ দলীয়করণ এবং ভোটহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি বাংলাদেশকে এক নিঃশ্বাসগন্ধহীন দেশে পরিণত করেছিল। তারা উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই জাতি এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে উঠে। এ সময় বক্তারা মেহেরপুর জেলার উন্নয়ন ভাবনা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং জনগণের প্রত্যাশা নিয়েও আলোচনা করেন। তারা বলেন, এখনই সময় সংবিধান পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া এবং প্রশাসনের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত এক নতুন ধারার সূচনা ঘটানোর। মনির হায়দার বলেন, মেহেরপুর ইতিহাসের সাক্ষী। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার যাত্রা, এখান থেকেই আবার শুরু হোক গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের নতুন অধ্যায়। সুধীজন সভায় উপস্থিত সবার মধ্যেই ছিল ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়, এবং সেই প্রত্যয়ে মেহেরপুরকে একটি শক্তিশালী মডেল হিসেবে গড়ে তোলার আশাবাদ।