আমেরিকা রাশিয়া মুখোমুখি হলেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ

আটকে পড়লে সেনা পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিনদের শিগগিরই ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ
মাথাভাঙ্গা মনিটর: ‘আমেরিকা রাশিয়া একে অপরের দিকে গুলি শুরু করলে তা হবে বিশ্বযুদ্ধ।’ ইউক্রেন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এক সাক্ষাৎকারে এই ভয়ংকর আশঙ্কার কথা জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে বাইডেন আরও বলেন, পরিস্থিতি খুব দ্রুত খারাপ হতে পারে। ইউক্রেনে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কোয়াড সম্মেলনেও একই কথা বলেছেন বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সাক্ষাৎকারে ইউক্রেন থাকা মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকানদের এখনই চলে যাওয়া উচিত। আমরা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনীর সঙ্গে মোকাবেলা করছি। এটি একটি খুব ভিন্ন পরিস্থিতি এবং পরিস্থিতি শিগগিরই খারাপ হয়ে যেতে পারে। প্রয়োজনে আমেরিকানদের উদ্ধারে বাইডেন ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাবেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট বলেন, সেই সম্ভাবনা নেই। আমেরিকা এবং রাশিয়া একে অপরের দিকে গুলি শুরু করলে তা হবে বিশ্বযুদ্ধ। আমরা আগের থেকে খুব আলাদা একটি পৃথিবীতে আছি। নাগরিকদের অবিলম্বে সরে যেতে বলেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও। শুক্রবার মেলবোর্নে কোয়াডভুক্ত দেশ অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরও ইউক্রেন ইস্যুতে বিবৃতি দেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বলেন, ‘ইউক্রেনে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। আমরা উত্তেজনার উদ্বেগজনক লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতির মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে বিভেদ নিরসন করতে দৃঢ়ভাবে অটল। আমরা রাশিয়াকে যুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সব রকমের চেষ্টা করেছি। ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি যে কোনো সময় আগ্রাসন হতে পারে। এটা পরিষ্কার যে চীনে শীতকালীন অলিম্পিক চলাকালীনও তা হতে পারে।’ এদিকে শুক্রবার স্যাটেলাইটে ধারণকৃত নতুন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে কলোরাডোভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার। যাতে দেখা গেছে, ইউক্রেনকে ৩ দিক থেকে গিরে ফেলেছে মস্কো। ক্রিমিয়া, পশ্চিম রাশিয়া ও বেলারুশের ইউক্রেনীয় সীমান্তে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে রাশিয়া। মাক্সার দাবি করেছে, এই এলাকাগুলোতে নতুন করে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ছবিগুলো স্থানীয় সময় বুধবার ও বৃহস্পতিবার ধারণ করা হয়। তবে রয়টার্স বলেছে, আলাদা করে ছবিগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি তারা। ম্যাক্সারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপগ্রহের ছবিতে দেখা গেছে ক্রিমিয়ার তিনটি স্থানে নতুন করে বা অতিরিক্ত সামরিক স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সেনা, সামরিক সরঞ্জাম, যানবাহনসহ সাড়ে ৫০০ নতুন তাঁবু দেখা গেছে। ছবিতে ক্রিমিয়ার নোভুজেরনোয়ের কাছে নতুন সেনা ও সরঞ্জাম পৌঁছাতে দেখা গেছে।
সমুদ্রে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন: ইউক্রেনকে সমুদ্রে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে রাশিয়া-বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অঞ্চলে উত্তেজনার মধ্যেই আগামী সপ্তাহে নৌমহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো। নৌমহড়া নিয়ে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানান, আজোভ সাগর সম্পূর্ণ অবরোধ করে রাখা হয়েছে। কৃষ্ণসাগর প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে রুশ বাহিনী। সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করার পরও ইউক্রেনে কোনো আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনার কথা বারবার অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। তবে প্রতিবেশী বেলারুশের সঙ্গে বড় আকারের সামরিক মহড়া শুরু করেছে মস্কো। রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের সঙ্গে ইউক্রেনের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বেলারুশ রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউক্রেনের সঙ্গে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এ সামরিক মহড়া উপলক্ষ্যে বেলারুশে যে সৈন্য সমাবেশ করেছে রাশিয়া তাকে স্নুায়ুযুদ্ধের পর বৃহত্তম মহড়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment