আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে অপারেশন করে মৃত্যুর পথযাত্রী রাজমিস্ত্রি শুকুর 

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গায় ডাক্তারের ভুল অপারেশনের শিকার হয়েছেন দরিদ্র এক রাজমিস্ত্রি। ডাক্তারের ভুলের মাসুল দিতে গিয়ে এখন মৃতুর পথযাত্রী রাজমিস্ত্রি শুকুর আলী। তিনি এখন আকাশের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি গ্রামের মৃত উকিল আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি শুকুর আলীর পরিবারের অভিযোগ ভুল অপারেশনের কারণেই আজ শুকুর আলীর এই দশা।

সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী শুকুর আলীর পরিবারের লোকজন জানান, মাস দেড়েক আগে হঠাত পেটেব্যাথা দেখা দিলে শুকুর আলীকে আলমডাঙ্গার সেফা ক্লিনিক অ্যা- ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয়। সেখান ডা. আল ইমরান রোগীর সাথে লোকদের বলেন শুকুর আলীর পিত্তিথলিতে পাথর আছে আপরেশন করতে হবে। ওই সময় ১৩ হাজার টাকার বিনিময়ে শুকুর আলীর অপারেশন করানো হয় সেফা ক্লিনিকে। আরও প্রায় ১৪ হাজার টাকার ওষুধ কিনদে হয় শুকুর আলীকে। ওই ওষুধ কেনা মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দেয় শুকুর আলীর পরিবারের কাছে। অনেক কষ্টে ছাগল, হাঁস-মুরগি বিক্রি করে রোগীর ওষুধ কেনেন তারা। ক্লিনিকে এক সপ্তাহ রাখার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শুকুর আলীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু শুকুর আলী সুস্থা না হয়ে দিনদিন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিন বিশেক পর আবারও শেফা ক্লিনিকের ডা. আল ইমরানের কাছে নেয়া হয় শুকুর আলীকে। তাকে দেখে ডা. ইমরান বলেন, রোগীকে আবার অপারেশন করা লাগবে। দ্বিতীয়বার অপারেশন করার পর শুকুর আলীর অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়। এর ১৩ দিনে মাথায় নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সযোগে শুকুর আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় শেফা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। শুকুর আলী স্ত্রী ফতে খাতুন বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডাক্তার বলেছেন অপারেশ করতে গিয়ে রোগীর নাড়ির একটা স্থান কেটে ফেলেছেন। রাজশাহীতে পাঁচদিন কাটানোর পর শুকুর আলীকে আবার নিজগ্রাম বেলগাছিতে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে শুকুর আলীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইদানীং শেফা ক্লিনিকের ম্যানেজার রবিউল হক প্রতিদিন শুকুর আলীর বাড়িতে যেয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসেন।

এ ব্যাপারে ডা. আল ইমরানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সিজার অপারেশনের কথা অস্বীকার করে বলেন আমি অপারেশন করিনি। কিন্তু আমরা তো রোগীর সমস্ত খরচ করছি। এদিকে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বিছানায় পড়ে থাকায় দুই কন্যাসন্তান নিয়ে শুকুরের পরিবার চরম মানবেতার জীবন যাপন করছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। শুকুর আলীর স্ত্রী ফতে খাতুন বলেন আমি কার কাছে যাব কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। কোথায় গেলে সঠিক বিচার পাবো? ডাক্তার আমার এতো বড় ক্ষতি করে দিলো? ডাক্তারের ভুল অপারেশনে আমরা এখন খুবই বেকায়দায় পড়ে আছি।’

 

Comments (0)
Add Comment