আলমডাঙ্গা দুর্লভপুরের মণ্ডলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার দূর্লভপুরে গ্রাম্য সালিসে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে আত্মসাত করায় ম-লসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা মানবতা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ মামলা দায়ের করেন দুর্লভপুর গ্রামের মিজানুর রহমান। মামলায় আসামি করা হয়েছে দুর্লভপুর গ্রামের মৃত মনোয়ার আলীর ছেলে মিনারুল, মৃত আকালে মণ্ডলের ছেলে লতিফ, ইকরামুলের ছেলে রানা, রেজাউলের ছেলে কামাল, লতিফের ছেলে সাদ্দাম ও পঁচা ম-লের ছেলে দরবেশ।
মানবতা ফাউন্ডেশন এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ১৯ আগস্ট রাতে দুর্লভপুর গ্রামের ম-ল, মিনারুল রানা, কামাল, দরবেশ, সাদ্দাম একই এলাকার মিজানুরকে আলমডাঙ্গা কামালপুরের পেটি ক্যানালের ধারে নিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। প্রাণ বাঁচাতে মিজানুর বাড়িতে ফোন করে। ঘণ্টাখানেক পর মিজানুরের স্ত্রী ও শ্বশুর দেড়লাখ টাকা দিয়ে ম-ল, মিনারুল ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মিজানুরকে ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। তাদের অব্যাহত চাপ ও হুমকির কারণে পরদিন ২ বিঘা জমি বন্ধক রেখে আরও দেড় লাখ টাকা জোগাড় করে মিনারুলদের দিতে বাধ্য হন মিজানুর। আরও ২ লাখ টাকার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন অভিযুক্তরা। উপায় না পেয়ে চুয়াডাঙ্গা মানবতা ফাউন্ডেশনের কাছে আইনি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। আবেদন পেয়ে মানবতা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার মিজানুর রহমান আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৩ মাস আগে মিজানুরের ছেলে আশিকের (২১) সাথে দুর্লভপুর এলাকার এক স্কুলছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান মৃত মনোয়ার আলীর ছেলে ম-ল মিনারুল। মিজানুর বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। গত ১৮ আগস্ট আশিক রাতে আলমসাধু চালক সামাদের নির্মাণাধীন বাড়িতে বন্ধুদের সাথে পিকনিক শেষে বাড়ি ফেরার পথে ম-ল মিনারুল, রানা ও লতিফ তাকে আটকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া স্কুলছাত্রীর সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপাচাপি করতে থাকেন। আশিক বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে ওই ছাত্রীকে জড়িয়ে তার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন মিনারুল। টাকা না দেয়ায় পরদিন ১৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিজানুরকে অপহরণ করে কামালপুর পেটি ক্যানালে তুলে নিয়ে যায় মিনারুল, রানা, লতিফ, কামাল, সাদ্দাম, দরবেশ। মিজানুর তার ফোনে বাড়িতে জানালে স্ত্রী নাছিমা ও শ্বশুর ছকিরদ্দি রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিনারুলদের দেড় লাখ টাকা দিয়ে মিজানুরকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। আরও টাকা চেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। পরদিন জালালের ছেলে মহাবুলের নিকট ২বিঘা জমি বন্ধক রেখে আরও দেড় টাকা মিনারুলদের দেন মিজানুর। আরও দু লাখ টাকা দাবি করে আসছে মিনারুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বাধ্য হয়ে মিজানুর দুর্লভপুর গ্রামের মৃত মনোয়ার আলীর ছেলে মিনারুল, মৃত আকালে ম-লের ছেলে লতিফ, ইকরামুলের ছেলে রানা, রেজাউলের ছেলে কামাল, লতিফের ছেলে সাদ্দাম ও পঁচা ম-লের ছেলে দরবেশের বিরুদ্ধে বলপূর্বক ৩ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলে গতকাল বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত আলমডাঙ্গাতে মামলা দায়ের করেছেন। মিজানুর ও তার ছেলে আশিক এলাকার স্কুলপড়–য়া মেয়ের সাথে আশিককে জড়িয়ে বদনাম দেয়ার বিষয়ে এলাকার ম-ল মিনারুল ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানহানির অভিযোগ তুলে মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার বরাবর আইনি সহায়তা ও মানবাধিকার টিম নিয়ে তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন।

Comments (0)
Add Comment