আজ ২১ রমজান। আজ থেকে শুরু হচ্ছে নাজাতের দশক। গতকাল থেকেই মসজিদে মসজিদে ইতিকাফ শুরু হয়েছে। ইতিকাফ এমন একটি গুরুত্বপূর্র্ণ ইবাদত, যা ইসলাম পূর্ব যুগ থেকে বিদ্যমান। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন (সহীহ বুখারী:২০২৫)। আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারীম (স.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। এক বছর ইতিকাফ করেননি। এর পরের বছর তিনি বিশ দিন ইতিকাফ করেছিলেন (সুনানে তিরমিযী:৮০৩)। ইতিকাফ করা বহু পূণ্যের কাজ, তবে আমলটি সুন্দর হওয়ার জন্য কিছু নিয়ম অনুসরণ করা খুবই জরুরি। সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফ করলে শবে কদর পাওয়া নিশ্চত হয়। ইতিকাফের জন্য নিয়ত করা আবশ্যক। নিয়ত করা ছাড়া মসজিদে অবস্থান করলে সেটা ইতিকাফ বলে গণ্য হবে না। পুরুষরা জামে মসজিদ বা পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতিকাফ করবে। এছাড়া অন্যত্র ইতিকাফ করলে সেটা ইতিকাফ হবে না। ওয়াজিব ইতিকাফ আদায় করার জন্য রোজা রাখা আবশ্যক, রোজা রাখা ব্যতিত তা আদায় হবে না। আর সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফ তো রমজানেই হয়ে থাকে, তাই তা রোজা রাখা ব্যতিত আদায় হবে না। সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফ আদায়ের জন্য শুরুতেই পুরো দশদিন ইতিকাফের নিয়ত করবে। এক সাথে দশদিন ইতিকাফের নিয়ত না করলে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফ আদায় হবে না। সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফের জন্য বিশ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। সূর্যাস্তের সময় মসজিদে না থাকলে তার সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ইতিকাফ আদায় হবে না। ইতিকাফের আদব হল, সর্বদা ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকবে। জিকির-আযকার তিলাওয়াত করবে। অনর্থক কথাবার্তা ও কাজ কর্মে লিপ্ত হবে না এবং কিছু দ্বীনি কিতাবাদী পড়বে ও অন্যকে পড়ে শোনাবে। গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া এক মুহূর্তও মসজিদের বাইরে অবস্থান করলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। মহিলারা ও তাদের ইতিকাফের নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্যত্রে গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া সামান্য সময় অবস্থান করলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। অসুস্থতার কারণেও সামান্য সময় বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। এতেকাফ অবস্থায় ভুলেও মসজিদ থেকে বের হলে এতেকাফ ভেঙে যাবে। ফরজ গোসল ও সুন্নাত গোসল ছাড়া সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। শেষ দশকের কোন একদিন রোজা ভেঙে গেলে অথবা কোন কারণে রোজা রাখতে না পারলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)