একাদশে ভর্তি আবেদন শুরু হতে পারে ২৪ জুলাই : বাড়ছে ফি

স্টাফ রিপোর্টার: চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে আগামী ২৪ জুলাই। এবারও তিন ধাপে আবেদন নেয়া হবে। প্রথম ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হতে পারে ২১ আগস্ট রাতে। এরপর আরও দুই ধাপে আবেদন গ্রহণ, ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও চূড়ান্ত ভর্তি শেষে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ‘একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নীতিমালা-২০২৫’র খসড়া থেকে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী সোমবার (২১ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, খসড়া নীতিমালায় খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না। আবেদন, ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও চূড়ান্ত ভর্তির যে তারিখগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বহাল থাকতে পারে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে প্রথম ধাপে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হতে পারে আগামী ২৪ জুলাই, যা চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ২১ আগস্ট রাত ৮টায়। প্রথম ধাপে ভর্তি সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন করতে হবে আগামী ২৫ আগস্ট রাত ৮টার মধ্যে। দ্বিতীয় ধাপে আবেদন গ্রহণ করা হবে ২৬ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। ফল প্রকাশ হবে ৩১ আগস্ট রাত ৮টায়। তৃতীয় ধাপে আবেদন গ্রহণ করা হবে ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। সর্বশেষ মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ হবে ১৪ সেপ্টেম্বর। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে চূড়ান্ত ভর্তি, যা চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ভর্তির সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে একাদশ শ্রেণিতে সারাদেশে একযোগে ক্লাস শুরু হবে।
প্রস্তাবিত খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী আগের মতো এবারও একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে কোনো পরীক্ষা বা লটারি হবে না। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পছন্দক্রম অনুযায়ী কলেজ বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে ঢাকার নটর ডেম কলেজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তির অনলাইন আবেদন ফি বাড়তে পারে। খসড়া নীতিমালায় এ বছর ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২২০ টাকা। গত শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি ছিল ১৫০ টাকা। সেই হিসাবে এবার ফি বাড়ছে ৭০ টাকা। তবে চূড়ান্ত নীতিমালায় ফি বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবেন, তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় এবারও কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে এ ভর্তির কাজ সম্পন্ন করা হবে। খসড়া নীতিমালায় ভর্তিতে সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি কত টাকা নেয়া যাবে, তা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) গতবারের মতোই ৫ হাজার টাকা ফি দিতে হবে।
ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মহানগর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ হাজার টাকা এবং উপজেলা বা মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেড় হাজার টাকা করে নেয়া যাবে।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর এলাকায় এমপিওভুক্ত নয় এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাংলা ভার্সনে আগের মতো সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা ছাড়া দেশের অন্যান্য মহানগর এলাকার বাংলা ভার্সনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা এবং উপজেলা বা মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষা বোর্ড শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চয়ন করার সময় শিক্ষার্থীপ্রতি বিভিন্ন খাতে (যেমন রেজিস্ট্রেশন ফি, ক্রীড়া ফি) সর্বমোট ৩৩৫ টাকা আগের মতো রাখা হয়েছে।
গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী। তবে সারাদেশে কলেজ, মাদরাসা, পলিটেকনিক ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য আসন রয়েছে সাড়ে ৩৩ লাখ। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পরও আসন শূন্য থাকবে প্রায় ২০ লাখ।