খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ১৮ রমজান। পবিত্র মাহে রমজানের মাগফেরাত দশকের আজ অষ্টম দিন। রমজান মাস বেশি বেশি দান-খয়রাত করার মাস। এই মাসে প্রতিটি নেক আমলের ছওয়াবকে কমপক্ষে সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয়। এজন্য এই মাসে দান-খয়রাত করলে অন্য মাসের চেয়ে অনেক গুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যাবে। ইতঃপূর্বে এই কলামে ইসলামের অন্যতম ভিত্তি যাকাত প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল। আজ যাকাত ছাড়া অন্যান্য দান-খয়রাত ও সদকাহ সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। হুজুর (সা.) সর্বদা গরিব ও অভাবীদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ও দয়াপ্রবণ ছিলেন। কিভাবে গরিব মানুষের মুখে হাঁসি ফোটানো যায় এই জন্য সর্বদা ব্যতিব্যস্ত থাকতেন। তার কাছে কেউ কোন কিছু সওয়াল করলে তিনি কখনও তাকে খালি হাতে ফেরাতেন না, নিজের সাধ্যমত দান করতেন। হতদরিদ্র ও নিঃস্ব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতি উৎসাহ প্রদান করতে দয়ার নবী (সা.) এরশাদ করেন, যদি কোনো ব্যক্তি কোন বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করবে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সবুজ বস্ত্র পরিধান করাবেন। যদি কেউ কোন ক্ষুধার্তকে খানা খাওয়ায় আল্লাহপাক তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। আর যদি কেউ কোন পিপাসিতকে পানি পান করাবে মহান আল্লাহপাক তাকে জান্নাতের মোহরযুক্ত পানীয় পান করাবেন (আবু দাউদ, তিরমিজী)। আর এক হাদিসে হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা জান্নামের আগুন হতে নিজেকে বাঁচাও একটি খেজুর দান করে হলেও। যাকাত ছাড়াও মালের ভেতর আরও অনেকের হক রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, সৎকাজ শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় যে, তোমরা তোমাদের মুখম-ল পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে ফেরাবে, বরং প্রকৃত সৎকাজ হল ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামতের দিন ও ফেরেশতাদের প্রতি, আসমানী কিতাবসমূহ ও পয়গম্বরদের ওপর; তদুপরি ধন-সম্পদ প্রিয় হওয়া সত্বেও দান করে আত্মীয়স্বজন, এতিম-মিসকিন, ভিক্ষুক এবং গোলাম আজাদ করার বাপারে, আর নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে (সূরা বাকারা: ১৭৭)। দান করলে মাল কমে না, বরং বাড়ে। আরও অনেক আয়াতে গরিব, দুঃখীদেরকে দান করার আদেশ দিয়েছেন। তাই আসুন আমরা সকলে নাজাতের এই মাসে বেশি বেশি দান করি। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)

Comments (0)
Add Comment