চুয়াডাঙ্গার আড়িয়ার চকে গাছ থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী

অলৌকিক কোনো ঘটনা নয় : বৈজ্ঞানিক কারণেই নির্গত হচ্ছে ধোঁয়া
গড়াইটুপি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ আড়িয়ার চকে গাছ থেকে ধোঁয়া কু-লী বের হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে কয়েকটি গাছ থেকে সরু আকৃতির ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি অলৌকিক মনে করে আশপাশ গ্রামের অনেকেই আসছেন দেখার জন্য। আবার অনেকে গাছের নিচে শিরনি করার কথাও বলছেন। গাছ থেকে ধোঁয়া বের হওয়া অলৌকিক কোন ঘটনা নয়, বিজ্ঞানে এর ব্যাখ্যাও আছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে আড়িয়ার চক গ্রামে উৎসুক জনতার ভীড় দেখা যায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আড়িয়ার চক গ্রামে প্রতিদিন সন্ধ্যার আজান শুরু হলেই সারি সারি লম্বু গাছের মাথা থেকে সরু আকৃতির ধোঁয়া বের হওয়া শুরু হয়। আজানের ধ্বনি শেষ হবার সাথে সাথেই ধোয়া আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনাটি অনেকেই শোনার পর বিশ্বাস না করলেও নিজ চোখে দেখার পর বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছেন। এই খবরে আশপাশ গ্রামের শত শত উৎসুক লোকজন প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে জমায়েত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই অলৌকিক ঘটনা স্বচোখে দেখতে ছেলে মেয়ে, কিশোর-কিশোরী, বয়োবৃদ্ধরা ভীড় জমায়। বয়োঃজৈষ্ঠ কয়েকজন বলেন, অনেকদিন ধরেই এই ঘটনাটি ঘটছে। আজানের সাথে যেহেতু এর সম্পর্ক আছে সেহেতু মহান আল¬াহ তাআলার পক্ষথেকে এটা কোনকিছুর আলামত হতে পারে। এদিকে অনেকেই শিরনি করার কথাও বলছেন।
তবে বিজ্ঞান বলছে, গাছের ধোঁয়া অলৌকিক ঘটনা নয়। একধরণের ম্যাপল ট্রি আছে যারা বিদ্যুত তৈরি করতে পারে। এ গাছের আদিবাস অস্ট্রেলিয়ায়। সেদিক থেকে ধোঁয়া উৎপন্নকারি গাছ ইউক্যালিপটাসও অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার হিডেলবার্গ এর ইউক্যালিপটাস বনের গাছ বিদ্যুত তৈরি করতে পারে। কেন শুধু মাগরিবের আজানের সময় ধোঁয়া কু-লী দেখা যায়? এ প্রশ্নেরও ব্যাখা রয়েছে বিজ্ঞানে। বলা হয়েছে, গাছ অক্সিজেন ত্যাগ করে এবং পরিবেশ থেকে কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করে; কিন্তু সন্ধ্যার সময় যখন অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম শিথিল হয়ে যায় তখন বিপরীত অবস্থায় কার্বনডাই অক্সাইড ত্যাগ এবং অক্সিজেন গ্রহণ ঘটে, আর যেহেতু মাগরিবের সময় হলো আলো আধারের মধ্যবর্তী সময় এবং তখন কার্বনডাই অক্সাইড ত্যাগ সবে মাত্র শুরু হয় তাই সেই সময় এই কার্বনডাই অক্সাইড বেশি পরিমাণে বের হয়ে যাওয়ায় তা ধোঁয়ার কু-লীর সৃষ্টি করে।

Comments (0)
Add Comment