চুয়াডাঙ্গার ফেরিঘাট রোডে একটি ইলেক্ট্রিক পণ্যের গোডাউনে  আগুন 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ফেরিঘাট রোডে একটি ইলেক্ট্রিক পণ্যের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে ফেরিঘাট রোডের তিনতলা একটি ভবনের নিচতলার ওই গোডাউনে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকা-ে প্রায় কোটি টাকার ইলেক্ট্রিক পণ্য পুড়ে যায়। আগুনের ফুলকি ও ধোয়া দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এরপর আগুনের ভয়াবহতা মারাত্মক আকার ধারণ করলে ফায়ার সার্ভিসের আরও একটি দল এসে কাজ শুরু করে। এরপর রাতের আগুন ৪ ঘণ্টা পর সকাল হলে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। উপজেলা প্রশাসন ও পৌর মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে নিচতলার গোডাউনে আগুন লাগার সাথে সাথে ওই ভবনে বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে নেয় প্রতিবেশীরা। এরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিতে কাজ শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, রাত ২ টার দিকে তিনতলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুনের শিখা ও ধোয়া দেখতে পায় ওই এলাকার এক নাইটগার্ড। তার ডাকাডাকিতে আশেপাশের লোকজন এসে খবর দেয় ফায়ার সার্ভিসকে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গোডাউনের সাটার ভেঙে আগুনের ভয়াবহতা দেখতে পায়। এরপর শুরু হয় নিয়ন্ত্রণ কাজ। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় যুবকরাও অংশগ্রহণ করে। সকলের চেষ্টায় সকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে গোডাউনের প্রায় সব মালামাল পুড়ে যায়। গোডাউন মালিক মামুনুর রহমান ও ওখানে কর্মরতরা জানান, সুপার স্টার কোম্পানির সাথে ব্যবসা করেন মামুনুর রহমান। মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেটে তার দোকান আছে এবং ফেরীঘাট রোডের ওই বাড়িটির নিচতলা ভাড়া নিয়ে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করেন। গোডাউনে সুপার স্টার কোম্পানির প্রায় কোটি টাকা মূল্যের লাইট, ফ্যান ও তার রাখা ছিলো। প্রতিদিনের ন্যায় রাতে গোডাউন বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। ঘন্টা দুয়েক পর খবর পায় গোডাউনে আগুন লেগেছে।
ওই ভবনের মালিক নাগিব মাহফুজ জানান, বাড়িটির নিচতলা গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেয়া আছে। ওই গোডাউনে এলইডি বাল্প, বৈদ্যুতিক পাখা ও বৈদ্যুতিক তার রাখা হতো। ইলেক্ট্রিক পণ্যের কারণে আগুন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌছায়। ভবনের পেছনের দেয়াল কিছুটা ফেটে গেছে। তবে আগুন ছড়িয়ে না পড়ায় আশপাশে ক্ষয়ক্ষতি খুব বেশি হয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন যাবত গোডাউনের ভেতরে ওয়েন্ডিংয়ের কাজ করেছিলো। ভেতরে ওয়েলন্ডিংয়ের কাজ করতে নিষেধ করার পরও তারা বিষয়টি কর্ণপাত করেনি। ধারণা করছি ওয়েলন্ডিংয়ের ফুলকি থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফি জানান, আগুন লাগার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি ওই গোডাউনের ভেতরে আগুন লাগার ঘন্টাখানিক আগেও ওয়েলন্ডিংয়ের কাজ করেছে। আগুনের ফুলকি থেকে এটির সূত্রপাত হতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, রাত ২টার পর খবর পেয়ে নিয়ন্ত্রণ কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি দল। টানা ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। গোডাউনের প্রবেশ পথ ও জায়গা সরু হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। এছাড়া গোডাউন ইলেক্ট্রিক জিনিসপত্র থাকার কারণে দ্রুতই আগুনের ব্যাপকতা ছড়ায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।

Comments (0)
Add Comment