চুয়াডাঙ্গায় ভিক্ষুকের ভিড় : মারামারি

 

খাইরুজ্জামান সেতু: ভিক্ষাবৃত্তি দেশে আইনত দ-নীয় অপরাধ। এ আইন প্রণয়নের পাশাপাশি ভিক্ষুকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষে চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি করার লক্ষে বিভিন্নভাবে সহায়তা দেয়া হয় যেমন, তেমনই ভূমিহীনদের মধ্যে সরকার বাড়িও উপহার দিচ্ছে পর্যয়ক্রমে। এরপরও ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হয়নি। উপরোন্ত মাঝে মাঝে ভিক্ষুকদের ভিড়সহ তাদের হটকারিতা দেখেও হতবাক হতে হয়। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পৌর কবরস্থান তথা জান্নাতুল মওলা কবরস্থানের প্রধান ফোটকের সামনে একদল নারী পুুরুষ ভিক্ষুকের মারামারি, লাঠালাঠি দেখে পথচারীদের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এসব ভিক্ষুকদের মধ্যে কতজনের সত্যিই অভাব, আর কতজনের স্বভাব তা খতিয়ে দেখা দরকার। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বেশ মসুল্লিসহ একাধিক পথচারি বলেন, সপ্তাহের প্রতি জুম্মার আজান হওয়ার আগে থেকেই জান্নাতুল মওলা কবরস্থান জামে মসজিদ ও কবরস্থানের সামনে ভিক্ষুকেরা ভিক্ষার জন্য সুবিধাজনক স্থান দখলে নিতে থাকেন। গতকাল শুক্রবারও দৃশ্য ছিলো অভিন্ন। কবরস্থানের মূল দরজার সামনে কয়েকজন নারী ভিক্ষুক অবস্থান নেন। ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। বেলা পৌনে ১টার দিকে একজন পুরুষ ভিক্ষুক তার নারী সহযোগির সহযোগিতায় মূল দরজার নিকটস্থ স্থানে বসার চেষ্টা করেন। সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থানরত কয়েকজন নারী ভিক্ষুক রুখে দাঁড়ান। প্রথমে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়া হলেও পরে শুরু হয় লাঠালাঠি। টেনে হেঁচড়ে কয়েকজনকে ফেলেও দেয়া হয়। দৃশ্য দেখে কয়েকজন মসুল্লি দ্রুত ছুটে গিয়ে মারামারি ঠেকান। এরপরও বাকযুদ্ধ চলে বেশ কিছুক্ষণ। গতকাল শুক্রবার জান্নাতুল মওলা কবরস্থানের মূল দরজা থেকে ভিক্ষুকদের লম্বা লাইন মসজিদের সামনে পর্যন্ত চলে যায়। অর্ধশতাধীক ভিক্ষুকের ভিড় ও মারামারি দেখে কয়েকজন প্রশ্ন তুলে বলেন, ভিক্ষুকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে নাকি? কিছুদিন আগেও তো এতো ভিড় জমতো না। প্রসঙ্গত: উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ^ দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। সরকার দরিদ্রবিমোচনে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভিক্ষুকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষে ভিক্ষুকদের তালিকা প্রণয়নের পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসনেরও পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে মাঝে কিছুদিন ভিক্ষুকের সংখ্যা রাস্তা, পাড়া মহল্লায় কম দেখা গেলেও সম্প্রতি আবারও ভিক্ষুকের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেনো? কয়েকজন ভিক্ষুকের নিকট ভিক্ষা করছেন কেনো? কতদিন ধরে ভিক্ষা করছেন? ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনে যেসব অর্থ এবং মালামাল দেয়া হয়েছিলো সেসব পেয়েছিলেন কিনা জানতে চাওয়া হলে প্রায় সকলেই নীরব থেকেছে। কয়েকজন অবশ্য বলেছেন, পেটের তাগিদেই পথে নামতে হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment