জীবননগর ব্যুরো :জীবননগর উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ‘আপত্তিকর ভিডিও’কে কেন্দ্র করে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে ঘটনাটির পেছনে ব্ল্যাকমেইল, জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠে এসেছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযোগ করেন, তার ফুপাতো দেবর নাজিম দীর্ঘদিন ধরে তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তিনি রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে ভাসুরপুত্রকে জোর করে তার ঘরে ঢুকিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ভিডিও দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয় বলে দাবি তার।
গৃহবধূ জানান, পরে আবারও টাকা দাবি ও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নাজিম ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড করে। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, ফলে তিনি চরম মানহানির শিকার হন। তার দাবি, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। ওরা আমাকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করেছে।
অভিযুক্ত নাজিমের মোবাইলে ফোন করে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, তার মামা রফিকের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
পরদিন সাংবাদিকরা রফিকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, এই বিষয়টা গ্রামের সালিশে মীমাংসা হবে, নিউজ করার দরকার নাই।
ভিডিওতে থাকা ভাসুরপুত্র ইমনের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গেলে ইমনের বাবা মানিক প্রথমে জানান, ছেলে বাড়িতে নেই। পরে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য এড়িয়ে যান। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার ছেলে সম্পর্কে ভিডিওর কথা বলে নাজিম ৩ হাজার টাকা নিয়েছে।
গ্রামের লোকজনের দাবি—ইমনের পরিবার বখাটেদের ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
ফেক আইডির আতঙ্ক
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কিছু যুবক ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে যাদের-তার নামে বাজে মন্তব্য ও মানহানিকর পোস্ট করছে। এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে তদন্তে যাওয়া একজন স্থানীয় সাংবাদিককে অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি ফেক আইডি (ইব্রাহীম নামে) ব্যবহার করে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে। এলাকার মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—তদন্ত করতে গেলেই কি সাংবাদিকের দোষ?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ভিডিও ছড়ানোর কারণেই গ্রামের পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও সাধারণ মানুষের দাবি—
ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং ব্ল্যাকমেইলের শিকার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হোক।