দর্শনা অফিসঃদর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদি আগে-ভাগেই প্রাথীরা নিজেদের মধ্যে প্রতীক ভাগাভাগি করে নিয়েছেন, তবুও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বরাদ্দা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩ সভাপতি, ৫ সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন পদে ৩১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে শুক্রবার প্রত্যেক প্রার্থীই জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র। প্রার্থীরা ভোটার ও সমর্থক সহ দলবলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্যতম শহর দর্শনা। শিল্প শহর দর্শনার পরিচিতি গোটা দেশ জুড়ে রয়েছে। দর্শনা দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন মানে যেন গোটা এলাকা জুড়ে বইছে আলোচনার ঝড়। ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন হলেও সাড়ে ৭ বছরের বেশী সময় পর এবারের নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী ১৪ নভেম্বর। এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে যেমন সরব আলোচনা, তেমনি ভোটারদের মধ্যে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দিপনা লক্ষনীয়। দর্শনা বাজারের ব্যবসায়ীদের এ নির্বাচন বরাবরই ব্যাপক আলোচনা-সমলোচনার ঝড় তোলে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে নির্বাচনী আলোচনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। নির্বাচনকে ঘিরে শুধু বাজার এলাকায় নয় যেন গোটা শহরে নির্বাচনী গরম বাতাশ বইছে। দর্শনা রেল বাজার এলাকার প্রতিটি অলি-গলি ও প্রধান সড়কে প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সংবলিত ডিজিটাল বিলবোর্ড ও পোস্টারে ছেয়ে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকেও জানান দেয়া হচ্ছে প্রার্থীতা। দিনের বেলায় প্রার্থীদের খুব একটা নির্বাচনের মাঠে দেখা না গেলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে কেউ কেউ দলবদ্ধ আবার কেউ কেউ একাই চালিয়েছেন নির্বাচনীয় প্রচারভিযান। প্রত্যেক ভোটারকে একাধীকার হ্যান্ডবিল দিয়েছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের কাছে চাচ্ছেন দোয়া ভোট। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিলে দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তিন বছর মেয়াদি পরিষদ হলেও বিগত কমিটি দায়িত্বে ছিলেন টানা ৭ বছরেরও বেশী সময়। নানা জটিলতার কারণে ঠিকঠাক সময়ে নির্বাচন হয়নি। অবশেষে চলতি বছরের ২৫ মে গঠন করা হয় উপদেষ্টা পরিষদ।
পরে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠন করা হয় ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করা হয় অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজিজুর রহমানকে। এ কমিশনে অপর ৪ কমিশনার হলেন সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক এফএ আলমগীর, মোমিনুল ইসলাম ও মনির হোসেন। গত ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর আজিজুুর রহমান। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি গতকাল ২৩ অক্টোবর ভোটার তালিকা প্রকাশস করা হয়েছে। খসরা তালিকা অনুযায়ি ভোটার সংখ্যা হয়েছে ৭টি ওয়ার্ডে ৭৬৯ জন। ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্তি, নাম ও ওয়ার্ড সংশোধনী। ২৮ অক্টোবর চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৯ থেকে ৩০ অক্টোবর প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ। ১ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই, প্রার্থীতা বাতিলের উপর আপিল, শুনানী ও নিস্পত্তি। ২ নভেম্বর বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, ৩ নভেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ৪ নভেম্বর চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ। ১৪ নভেম্বর সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিরতীহিনভাবে দর্শনা ডিএস সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে গোপন ব্যালোটের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে। এবারের নির্বাচনে ১৩ টি পদের বিপরিতে তালিকায় রয়েছেন ৩১ জন প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার ছিলো প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ। যথারিতী প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে মাঠে রয়েছেন সাবেক সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন (চেয়ার)। নতুনদের মধ্যে রয়েছেন লুতফর রহমান (মই) ও তারিকুল ইসলাম জুয়েল (চশমা)। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন পুরণো হলেও ২ জন রয়েছেন নতুন প্রার্থীই। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন রতন (প্রজাপতি) সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান বাবু (চাঁদতারা), গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী সেলিম মেহমুদ লিটন (বাই সাইকেল) নতুনদের মধ্যে রিয়েল ইসলাম লিওন (ছাতা) ও নাসির উদ্দিন খান হাসু (সূর্যমুখি ফুল)। সহসভাপতি পদে আবুল বাসার (মোরড়) আরিফুল ইসলাম জয়নাল (কলস) ও রিন্টু জামান (মাছ)। সহসাধারণ সম্পাদক পদে আবিদ হাসান রিফাত (হরিণ) ও শরিফুল আলম (আনারস)। কোষাধ্যক্ষ পদে সাবেক কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন (টিউবওয়েল) ও মিজানুর রহমান (দেয়ালঘড়ি)। দপ্তর সম্পাদক পদে সাবেক দপ্তর সম্পাদক সোহাগ হোসেন (টেবিল) ও কালু মিয়া (হারিকেন)। এ ছাড়া ৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে ফরজ আলী (কাঠাল) ও মোঃ শরিফ (পেয়ারা)। ২ নং ওয়ার্ডে জাহিদুল ইসলাম (মোবাইল) ও হারেজ উদ্দীন (সেলাই মেশিন)। ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় আব্দুল এবং শামীম মিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ নং ওয়ার্ডে ওয়াসিম (পুটবল) ও মেহেদী হাসান (বেলচা)। ৬ নং ওয়ার্ডে হানিফ খা (আম) ও আজিজুল ইসলাম আজিজ (পানপাতা)। ও ৭ নং ওয়ার্ডে হাবিব শিকদার (জবাফুল), সাইদুর রহমান টুটুল (উড়োজাহাজ) ও আজাহার খান ঝন্টু (চায়েরকাপ)।