দামুড়হুদার চিৎলায় ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যুর অভিযোগ  

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দিয়ে গর্ভবতী গাভী গরু মেরে ফেলার অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে গরুর মালিক ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা গ্রামের আনসার আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের একটি ৮ মাসের গর্ভবতী গাভী গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ গাভী গরুটির চিকিৎসার জন্য দামুড়হুদা উপজেলার উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলাম খবর দেন গরুর মালিক আব্দুল কুদ্দুস। গত রোববার পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলাম চিৎলাগ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে গিয়ে গরুটিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। এক পর্যায়ে গুরুর মালিককে বলেন গরুটির শিরটানা রোগ হয়েছে, অপারেশন করাতে হবে। এরপর শুরু হয় দর কশাকশি। দরদাম শেষ হলে পশু চিকিৎসা নজরুল ইসলাম গাভী গরুটির অস্ত্রোপচার শেষ করে। একপর্যায়ে গরু মালিক বলেন শিরকেটে দিলেন যদি গরুর কোনো সমস্যা হয়? পশু চিকিৎসা বলেন গরুর কিছু হলে দায় দায়িত্ব আমার বলে ফিস নিয়ে চলে আসেন। গরুটির অস্ত্রোপচারের পর গরুটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। গরু মালিক পশু চিকিৎসককে বিষয়টি জানালে তিনি আর সেখানে না যেয়ে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। গত বুধবার গাভী গরুটি মারা যায়। পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলামের ভুল চিকিৎসায় গরুটি মারা যাওয়ার অভিযোগে ক্ষতিপূরণ চেয়ে গতকাল শনিবার দামুড়হুদা মডেল থানাতে লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস।

গরুর মালিক ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমি অনেক কষ্টে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে গরুটি কিনে ছিলাম। কয়েকদিন আগে গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দামুড়হুদা উপজেলার সরকারি পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলামকে চিকিৎসা জন্য ডাকি। তিনি এসে গরুটি দেখার পার বলেন অপারেশন করাতে হবে। অপারেশন করার আগে গরুটিকে ২টি ইনজেকশন পুশ করেন। তারপর অপারেশন করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে চলে যান। ওইদিন রাতেই গরুটি অসুস্থ পড়ে। তাকে বারবার মোবাইলে কল করি। তখন তিনি গরুটিকে ৫টি নাপা ট্যাবলেট খাইয়ে দিতে বলেন এবং পরদিন সকালে এসে গরুটি দেখে যাবেন বলেন। গত বুধবার গরুটি মারা যায়। তারপর থেকে তিনি আর আমার কল রিসিভ করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আমি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানাতে লিখিত অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, আমি আমার স্যার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে কথা বলে গরুটির চিকিৎসা দিয়েছি। ওষুধ বাবদ গরু মালিকের থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা নিয়েছি। কোনো ভুল চিকিৎসায় গরু মারা যায়নি। গরুটির ফুড পয়জনিং ছিলো হয়তো; সে জন্য মারা গেছে।

দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গাভী গরুটির চিকিৎসা দেয়ার পরে চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বিষয়টি আমাকে জানাই ওই সময় আমি কুষ্টিয়ায় ট্রেনিংয়ে ছিলাম। পরবর্তীতে গরুটি মারা গিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চিকিৎসা বাবদ টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Comments (0)
Add Comment