পাখিভ্যান চালিয়ে নিজের লেখাপড়া ও নির্বাহ করছে জীবিকা

রতন বিশ্বাস: অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে কোনো প্রতিবন্ধকতা দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কথাটি প্রমাণ করেছেন দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা মিশনপল্লির রাখাল ম-লের ছেলে মনি ম-ল। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও নিজের প্রবল ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের পড়ালেখা ও ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। কার্পাসডাঙ্গা বাজারে পাখিভ্যান চালানোর সময় বিশ্রামের ফাঁকে চায়ের দোকানে মনি ম-লের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি জানান, কার্পাসডাঙ্গা হাইস্কুল থেকে এএসসি পাস করার পর কার্পাসডাঙ্গা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়। সুনামের সাথে এইচএসসি পাস করি। অভাবের সংসারে ঋণ নিয়ে একটি পাখিভ্যান কিনে টাকা উপার্জন করতে থাকি। এর ফাঁকে দর্শনা কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হই। দিনে ভ্যান চালাই আর রাতে পড়ালেখা করি। পরীক্ষার সময় হলে একটু বেশি পড়ালেখা করে থাকি। ডিগ্রি পাশ করার পর যশোর এমএম কলেজে মাস্টার্স ভর্তি হই। এরই ফাঁকে ডিগ্রি পড়তে পড়তে বিয়ে করেছি। একটি সন্তান আছে আমার। পাখিভ্যান ৫ বছর ধরে চালাচ্ছি। দিনে ৪শ থেকে ৫শ’ টাকার মতো উপার্জন হয়। ভালোভাবে চলে যায়। মনি ম-ল আরও জানান, পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করার ইচ্ছা আছে। ভ্যান চালাতে আর ভালো লাগে না। শরীরে পেরে ওঠে না। একটা চাকরি হলে ভালো হতো। মনি ম-ল বলেন, ইচ্ছা থাকলে সবকিছু সম্ভব। আমার অনেক বন্ধু আছে যারা পাড়ালেখা করতে পারেনি কিন্তু আমি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি আবার পড়ালেখা প্রায় শেষের পথে। গ্রামের অনেক ভ্যান চালক জানে না যে আমি মাস্টার্সে পড়ালেখা করছি। আমি তাদের সাথে তাদের মতো করে চলাফেরা করি। আর যারা আমার পড়ালেখার বিষয়ে জানে তারা আমাকে অনেক সম্মান করে। আমার মনে আছে কার্পাসডাঙ্গার এক ছেলে আমাকে এইচএসসির পরীক্ষার সময় পরীক্ষার দিনগুলোতে দামুড়হুদায় পরীক্ষার হলে মোটরবাইকে করে নিয়ে যেতো। আমাকে তিনি অনেক সহযোগিতা করতেন ও সাহস যোগাতেন। তার এই উপকারের কথা আমি কখনো ভুলবো না। তবে তার নিষেধের কারণে আমি তার নাম বলতে পারবো না।

 

 

Comments (0)
Add Comment