পাখি প্রেমিক বখতিয়ার হামিদকে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ফুলেল শুভেচ্ছা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বেলগাছি গ্রামের পাখিপ্রেমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ বিপুল বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন-২০২১ পুরস্কার পাচ্ছেন। বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তিত্ব ক্যাটাগরিতে তাকে এ পদকের জন্য মনোনীত করা হয়। ৩১ মার্চ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী সংস্থা ও ব্যক্তিকে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে তিনটি শ্রেণিতে এই পুরস্কার দেয়া হয়। এ বছর আরো যে দুজন পুরস্কার পাচ্ছেন বণ্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা’ ক্যাটাগরিতে ড. মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খানকে মরণোত্তর। ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান’ ক্যাটাগরিতে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের টীম ফর এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (তীর) ‘বঙ্গবন্ধু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পুরস্কার’ পাচ্ছে।

এদিকে বখতিয়ারের এই সাফল্যে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা শাখা। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টায় টিএন্ডটি সংলগ্ন অস্থায়ী কার্যালয়ে তার হতে ফুল তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সমিতির নেতৃবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ইকলাস হোসেন মন্টু, সহ-সভাপতি রেজাউল কবীর, সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক আব্দুস সালামসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। নেতৃবৃন্দ বলেন, বখতিয়ার হামিদের এ সাফল্য দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারকে গর্বিত করেছে। তিনি চুয়াডাঙ্গাকে জাতীয় পর্যয়ে সম্মানিত করেছে। তরুণ বখতিয়ার হামিদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও প্রাণি সংরক্ষণে মনোযোগী ছিলেন। তার কারণে নিজ গ্রাম বেলগাছি আজ বন্যপ্রাণী ও পাখির গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। বখতিয়ার এই সাফল্যে পথ ধরে আরো এগিয়ে যাক এমনই প্রত্যাশা আমাদের।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে পাখিশিকারির প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাদের হাতে লাঞ্ছিত হন বখতিয়ার। এরপর বন্ধুদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।’ বন্ধ হয়ে যায় শিকারিদের গ্রামে আসা। এরপর গ্রামে পাখি ও প্রাণিদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেন। ২০১১ সালে ৩৫ জন তরুণকে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘বেলগাছি যুব সমাজ’ নামের সংগঠন। সে সময়ে টিউশনির টাকায় গ্রামের রাস্তার দুধার ও কবরস্থানের গাছগুলোতে এক হাজারের বেশি কলসি বেঁধে দেন। এরপর কলসির সংখ্যা বাড়তেই থাকে। এভাবে একযুগেরও বেশী সময় ধরে তিনি পাখি ও বন্যা প্রাণিদের অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছেন। এখানেই শেষ নয়। বখতিয়ার হামিদ তার বাড়িতে গড়ে তুলেছেন কেয়ার ফর আনক্লেমইড বিস্ট (কাব) হাসপাতাল। সেখানে অসুস্থ বণ্যপ্রাণি ও পাখিদের নিয়মিত চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। এজন্য তিনি প্রাণিসম্পদ বিষয়ে ২০১৬ সালে দীর্ঘমেয়াদি একটি কোর্সও সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া দেশের ২২টি জেলায় বিভিন্ন সেবাম‚লক প্রতিষ্ঠান ও ¯ে^চ্ছাসেবকেরা ‘মাটির কলসিতে পাখিদের’ অভয়াশ্রম বাস্তবায়ন করেছে।

Comments (0)
Add Comment